ঢাকা
১০ই মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
রাত ১০:১৮
logo
প্রকাশিত : জানুয়ারি ১৯, ২০২৫

চিলমারীতে থামছেনা অবৈধ বালু উত্তোলনের উৎসব

চিলমারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি: কুড়িগ্রামের চিলমারীতে কিছুতেই থামছেনা ব্রহ্মপুত্র নদ থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের উৎসব। ব্রহ্মপুত্র নদ থেকে বাল্কহেডে ড্রেজার লাগিয়ে বালু উত্তোলন করে নদের ডান তীর ঘেষে রানীগঞ্জ ইউনিয়নের ফকিরেরহাট এলাকা থেকে রমনা ইউনিয়নের জামতলা পর্যন্ত অর্ধশতাধিক পয়েন্টের মাধ্যমে বালু বিক্রির মহোৎসব চলছে।প্রশাসনের নাকের ডগার উপর দিয়ে এক শ্রেণীর অসাধু ব্যবসায়ী ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে এলাকাবাসীর কথায় তোয়াক্কা না করেই চালিয়ে যাচ্ছে বালুর ব্যবসা। এতে এলাকার রাস্তা-ঘাট ভেঙে যাওয়াসহ হুমকির মুখে ঢলে পড়ছে ব্রহ্মপুত্র নদের ডান তীর রক্ষা প্রকল্পসহ বেশ কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, বিভিন্ন অবকাঠামো, আবাদী জমি এবং হাজার হাজার বসতবাড়ি।ভোগান্তিতে রয়েছে এলাকার মানুষ। অপরিকল্পিত ও অবৈধভাবে ড্রেজার বসিয়ে বালু উত্তোলনের ফলে গত মৌসুমে দুটি চর ভেঙ্গে অন্তত ৫শতাধিক পরিবার তাদের বাড়ী-ভিটা হারিয়েছে বলে এলাকাবাসীর দাবী। দেখে না দেখার ভান করে চলছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।

জানা গেছে, কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলাধীন রাণীগঞ্জ ইউনিয়নের উত্তর থেকে রমনা ইউনিয়নের জামতলা পর্যন্ত এলাকায় ব্রহ্মপুত্র নদের ডান তীর রক্ষা প্রকল্পের কাজ শেষ হয়েছে কয়েক বছর আগে। এরই মধ্যে ওই এলাকাসমূহে কয়েক দফায় ব্লক পিচিং এ ধসও দেখা দিয়েছিল। পানি উন্নয়ন বোর্ড জরুরী ভিত্তিতে তা মেরামত করে নদী ভাঙন রোধ এবং ডান তীর রক্ষা প্রকল্প অক্ষত রাখতে ওই এলাকাসমূহে ড্রেজার বসিয়ে বালু উত্তোলনের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। নিষেধাজ্ঞাকে উপেক্ষা করে বর্তমানে রমনা ইউনিয়নের দক্ষিণ খরখরিয়া জামেরতল হতে রাণীগঞ্জ ইউনিয়নের কাচকোল বাজার থেকে ফকিরেরহাট পর্যন্ত অর্ধশতাধিক পয়েন্টে ড্রেজারের মাধ্যমে বালু উত্তোলন করে বিক্রির মহোৎসব করছে এলাকার প্রভাবশালীরা। প্রভাব খাটিয়ে এলাকাসীর কথায় কর্ণপাত না করে অবৈধভাবে ড্রেজার বসিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বালু ও মাটি বিক্রি করে হাতিয়ে নিচ্ছে লক্ষ লক্ষ টাকা। এলাকাবাসী ওই এলাকায় বালু উত্তোলন নিষেধ করেও কোন কাজ হচ্ছে না। এতে একদিকে হুমকির মুখে পড়েছে ডান তীর রক্ষা প্রকল্পসহ হাজার হাজার একর আবাদী জমি ও জনবসতি।

অপরদিকে পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃক নির্মিত বাধ রাস্তাসহ এলাকার রাস্তা-ঘাট বালু বহনকারী গাড়ীর চাকায় ভেঙ্গে নিশ্চিন্ন হয়ে যাচ্ছে। নিজেদের এলাকার নিশ্চিত ক্ষতি দেখেও প্রভাবশালীদের ভয়ে মুখ খুলতে পারছেনা অসহায় এলাকাবাসী। মুখ খুলে কোথাও কথা বললেই হুমকি আসছে বলেও জানান স্থানীয়রা। ড্রেজার বসিয়ে বালু উত্তোলনের ফলে গত মৌসুমে দুটি চর ভেঙ্গে অন্তত ৫শতাধিক পরিবার তাদের বাড়ী-ভিটা হারিয়েছে বলে এলাকাবাসীর দাবী। দীর্ঘদিন থেকে অবৈধ ভাবে বালু বিক্রির মহোৎসব চললেও অজ্ঞাত কারনে নিরব ভূমিকা পালন করছে কর্তৃপক্ষ।

সরেজমিন শুক্রবার বিকেলে রাণীগঞ্জ জকরিটারী এলাকায় গেলে ব্রহ্মপুত্র নদের ডানতীরের ব্লোকপিচিং ঘেষে ৩টি বাল্কহেড থেকে বালু নামানোর দৃশ্য চোখে পড়ে। পাশে বালুর পাহাড় তৈরী করা হয়েছে এবং সরকারী রাস্তায় স্থায়ীভাবে ইট দিয়ে বালুর স্থান নির্মাণ করা হচ্ছে। কাচকোল বাজার থেকে ফকিরেরহাট এলাকা পর্যন্ত ৭-৮টিসহ রমনা ইউনিয়নের জামতলা পর্যন্ত অর্ধশতাধিক বালুর পয়েন্ট দেখা যায়। এসময় কালিরকুড়া এলাকায় ২টি পয়েন্টের সামনে জরুরী ভিত্তিতে ডান তীরের ভাঙ্গন ঠেকানোর জন্য রাখা ব্লক দিয়ে বালুর পয়েন্টে যাওয়ার জন্য তৈরী করা রাস্তা লক্ষ্য করা যায়।

এসময় ওই এলাকার দুলাল মিয়া, জহির আলী, দিনেশ চন্দ্র, আবু তালেব, জাফর আলী, ফিরোজ, আসাদ, মজনু, আফজাল হোসেনসহ অনেকে জানান, সামনের জমিগুলোতে চর সৃষ্টি হলে আমাদের এলাকায় ভাঙ্গনের ঝুঁকি কমে যায়। এছাড়াও ডান তীরে সৃষ্ট চর থেকে আমরা নানান সুবিধা পেয়ে থাকি। অবৈধভাবে ড্রেজার বসিয়ে বালু উত্তোলনের ফলে চলতি মৌসুমে দুটি চর ভেঙ্গে অন্তত ৫শতাধিক পরিবার তাদের বাড়ী-ভিটা হারিয়েছে। বর্তমানে যেভাবে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে তাতে চর তো দুরের কথা ডান তীর রক্ষা প্রকল্প যে কোন সময় ছুটে যেতে পারে। এছাড়াও সারাদিন বালু পরিবহনের ফলে রাস্তার ধুলায় আমরা থাকতে পারি না। সকার থেকে শুরু হয়ে গভীর রাত পর্যন্ত বিভিন্ন রকমের পরিবহন দিয়ে বালু নেয়ায় রাস্তা-ঘাট নষ্ট হেয় যাচ্ছে। প্রাক্তন ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল করিম, মঞ্জু হাজি, লিটন, মান্নান(বাচ্চু), আজাহার আলী, আইজুল হক, আসলাম মেম্বারসহ অনেকেই এ ব্যবসার সাথে জড়িত বলে এলাকাবাসী জানায়।

বালু পয়েন্ট ব্যবসায়ী সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল করিম বলেন, মঞ্জু হাজির পয়েন্টে আমার একটি শেয়ার দেয়া আছে। এর বেশি আমি আর কিছু জানি না।

চিলমারী নৌ-ফাড়ি থানার আইসি মো.ইমতিয়াজ কবির জানান, বালু উত্তোলনকে নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসার জন্য আমরা চেষ্টা করছি।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার সবুজ কুমার বসাক বলেন, বালু উত্তোলনের বিষয়ে আমাদের অভিযান চলমান রয়েছে।

সর্বশেষ
logo
প্রকাশকঃ অধ্যাপক ড. জোবায়ের আলম
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকঃ তাপস রায় সরকার
মোবাইল: +৮৮০ ১৭৩৬ ৭৮৬৯১৫
কার্যালয় : বিটিটিসি বিল্ডিং (লেভেল:০৩), ২৭০/বি, তেজগাঁও (আই/এ), ঢাকা-১২০৮
মোবাইল: +880 2-8878026, +880 1736 786915, +880 1300 126 624
ইমেইল: tbtbangla@gmail.com (online), ads@thebangladeshtoday.com (adv) newsbangla@thebangladeshtoday.com (Print)
বাংলাদেশ টুডে কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি ও বিষয়বস্তু অন্য কোথাও প্রকাশ করা বে-আইনী।
Copyright © 2025 The Bangladesh Today. All Rights Reserved.
Host by
linkedin facebook pinterest youtube rss twitter instagram facebook-blank rss-blank linkedin-blank pinterest youtube twitter instagram