খালিদ হাসান, নলছিটি (ঝালকাঠি) প্রতিনিধি: ঝালকাঠির নলছিটি স্টিমার ঘাট গাছের চারার বাজার সংলগ্ন সুগন্ধা নদীর পারে উন্মুক্ত স্থানে ফেলা হচ্ছে ময়লা আবর্জনা। নদীর তীরবর্তী অংশে ময়লা আবর্জনা স্তুপ করে রাখা হচ্ছে। তীব্র গন্ধে স্থানীয়রা নাকাল হয়ে ওই এলাকা এড়িয়ে অন্যত্র দিয়ে চলাচল করছে। তবে এ নিয়ে তাদের মধ্যে বিরাজ করছে ক্ষোভ। তারা নলছিটি পৌর কর্তৃপক্ষকে ময়লা না ফেলার জন্য একাধিকবার জানালেও কোন উপকার হয়নি। তবে তাদের অভিযোগ উপক্ষা করে বছরের পর বছর ময়লা আবর্জনা ফেলা হচ্ছে সেখানে। নলছিটি পৌর এলাকায় ময়লা আবর্জনা ফেলার কোন সুনির্দিষ্ট জায়গা না থাকায় সারা শহর থেকে সংগ্রহ করা ময়লা আবর্জনা পৌরসভার পরিছন্নতা কর্মীরা ওই স্থানে ফেলে থাকে। ফলে পরিবেশ দূষণসহ নদীর পানি হচ্ছে দূষিত। নদীর তীরবর্তী মানুষজন আক্রান্ত হচ্ছে নানান পানিবাহিত রোগে।
সাপ্তাহিক বাজারের দিন বিপুলসংখ্যক ক্রেতা বিক্রেতার সমাগম ঘটে বাজারে। কিন্তু বাজার সংলগ্ন নদীর তীরে ময়লা ফেলার কারণে এই বাজারে ক্রেতাদের আনাগোনা অনেকটা কম থাকে। এ কারণে বাজারে গাছের চারা বিক্রি সহ আশপাশের ব্যবসায়ীরা পড়েছে বিপাকে। বেচা বিক্রি কমে গেছে অনেক অংশে। এছাড়া ওই এলাকার ঘর বাড়িতে বসবাসকারীরাও রয়েছে দুর্গন্ধের মধ্যে। অনেক বাড়ি ওয়ালারা বাসা ভাড়াও দিতে পারছেনা বাড়ির কাছে ময়লার স্তুপ থাকার কারণে।
নলছিটি বন্দরটি নদীমাতৃক হওয়ায় দূর দূরান্ত থেকে অনেক ব্যবসায়ী নৌকায় করে এখানে তাদের মালামাল বিক্রি করতে আসে। তাদের নৌকা নোঙর করার ঠিক পাশেই ময়লা আবর্জনার স্তুপ যা তাদের জন্য সবদিক দিয়েই নানান সমস্যার সৃষ্টি করছে। কোন ঘূর্ণিঝড়, বন্যা হলে বৈদ্যুতিক সমস্যা সৃষ্টি হয় তখন বিদ্যুৎ না থাকার কারণে নদীতে গোসল করা সহ বিভিন্ন প্রয়োজনে নদীতে আসে শহরে বসবাসকারীরা। ময়লার কারণে নদীতে ওঠা নামা সহ পানি দূষিত হওয়ায় তাদের কোন উপকারে আসে না নদী। পানি দূষিত হওয়ায় তা ব্যবহার করতে পারছে তারা। বিষাক্ত ময়লা দুর্গন্ধের কারণে স্থানীয়রা বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়। যারা নদীর পানির উপর নির্ভরশীল হয়ে নিত্য প্রয়োজনীয় কাজের জন্য নদীর পানি ব্যবহার করে থাকেন তারাও এখন বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে।
ভুক্তভোগী মোঃ মোস্তফা জানান, আমরা এখানে বাজারে আসি কিন্তু দুর্গন্ধের কারণে আমরা মালামাল বেচাবিক্রি করতে পারিনা। মোঃ রিয়াজ জানান, দোকানের কাছেই ময়লা ফেলা হয়, আমরা ব্যবসায়ীরা দীর্ঘদিন পৌর কর্তৃপক্ষকে জানালেও তারা কোন ব্যবস্থা নেয়নি। আকবার হোসেন বলেন, আমি এখানে গাছে চারা বিক্রি করতে আসি দীর্ঘদিন যাবত এখানে ময়লা ফেলার কারণে ক্রেতারা খুব কম আসে এবং ময়লার মধ্যে অনেক সিলিংস, কাঁচ ভাঙ্গা সহ বিভিন্ন বিষাক্ত জিনিস থাকে যাতে করে এখানে চলাফেরা করা অনেক ঝুঁকি রয়েছে। কেউ ময়লার উপর দিয়ে নদীতে নামা ওঠা করে এতে করে যেকোন সময় ঘটতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা।
নলছিটি পৌরসভার প্রশাসক মো. নজরুল ইসলাম জানান, পৌর এলাকার মধ্যে উপযোগী ময়লা ফেলার তেমন কোন জায়গা নেই, আমরা বিকল্প স্থানে ময়লা ফেলার স্থান খুঁজছি। আমি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে যোগাযোগ করতেছি, যাতে ময়লা আর্বজনা উন্মুক্ত স্থানে না ফেলে এটার ব্যাপারে কোন ব্যবস্থা নেয়া যায় কিনা। নদীর পাড়ে ময়লা ফেলা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ, আমার যত দ্রুত সম্ভব এ ব্যাপারে পদক্ষেপ নিব।