ঢাকা
১৩ই মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
সকাল ১০:১৪
logo
প্রকাশিত : ডিসেম্বর ১৫, ২০২৪

আশাশুনির শীতলপুর আশ্রয়ন-২ প্রকল্পের ঘর পাওয়া ৯ জনকে তাড়িয়ে জবর দখল

জি এম মুজিবুর রহমান, আশাশুনি (সাতক্ষীরা) : আশাশুনি উপজেলা সদরের শীতলপুর আশ্রয়ন-২ প্রকল্পের আওতায় ৪র্থ পর্যায় ১৯ টি গৃহ নির্মান করে ১৯ পরিবারকে বরাদ্দ দেওয়া হয়। প্রভাবশালীদের সহযোগিতায় বড় অংকের টাকা ব্যবহার করে ৯ পরিবারকে ঘর থেকে তাড়িয়ে দিয়ে ঘর জবর দখল করে নেওয়া হয়েছে। এব্যাপারে ঘরহারা পরিবারের পক্ষ থেকে উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে।

অভিযোগে প্রকাশ, সরকারি অর্থে ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে জমি ও ঘর প্রদানের লক্ষ্যে উপজেলার সকল এলাকায় কাজ করা হয়েছে। প্রকল্পের শীতলপুর আশ্রয়ন -২ প্রকল্পে চতূর্থ পর্যায়ে ২০২৩-২০২৪ অর্থ বছরে ১৯ টি ঘর নির্মান করা হয়। চরম পশ্চাতপদ, ওয়াপদার বাঁধের উপর ও স্লোবে মানবেতর ভাবে জীবন যাপনকারী ঋষি সম্প্রদায়ের ৯ পরিবারকে একপাশে একটি অংশে তাদের জায়গা দেয়া হয়। বাকী অন্যপাশের ১০ টি অন্যদের নামে বরাদ্দ করা হয়। নির্মান কাজ শেষে সকলকে ঘর বুঝিয়ে দেওয়া হয়। ঘর বুঝে পেলেও কাজের সন্ধানে দু' একজন বাইরে কাজে যাওয়ার সুযোগ এবং ৫ আগষ্টের পর আইন শৃংখলার সুযোগ কাজে লাগিয় একযোগে ঋষি সম্প্রদায়ের ৮ টি ঘরে থাকা মালামাল বাইরে ছুড়ে ফেলে দিয়ে ঘর জবর দখল করা হয়। মানুষ ঘর দখলের তান্ডব দাড়িয়ে দাড়িয়ে দেখলেও কেউ প্রতিবাদ করার সাহস পাননি।

সরকারি ভাবে ঘর পাওয়া ঋষিরা হলো- সোনা, বিকাশ দাশ, অর্জুন দাশ, পারুল দাশ, দুখিনী, লক্ষ্মীকান্ত দাশ, রানিমা দাশ, উত্তম দাশ। ঘর জবর দখল করে ঘরে উঠেছে মৃত মালেক গাজীর স্ত্রী খাদিজা, মুজিবর গাজীর স্ত্রী শাহানারা (বারদা), কালাম সরদারের ছেলে বাবু, কাসেমের স্ত্রী খাদিজা, সিরাজুল গাজীর ছেলে সুমন, শরিফুলের স্ত্রী মারুফা ও ছদর আলীর স্ত্রী ময়না। 

এব্যাপারে ঘর জবর দখল হয়ে যাওয়া ভুক্তভোগি সুভাস দাশের ছেলে বিকাশ দাশ জানায়, তার পাওয়া ঘরটি বারোদহ গ্রামের একজন জোর পূর্বক দখল করে নিয়েছে। ঘরে থাকা তার জিনিসপাতি ছুড়ে ছুড়ে ফেলে দেওয়া হয়। আমরা চোখের জল ফেলে কেঁদেছি, ভগবানের কাছে সাহায্য চেয়েছি।আমি স্থানীয় মেম্বর সিরাজুলের কাছে গিয়ে অভিযোগ করি। তিনি কয়েক দিন দেরী করো, চেয়ারম্যান মেম্বর এক সাথে বসে বিষয়টি দেখবো। তোদের ঘর সরকার দিয়েছে, তোরা তা ফিরে পাবি। বলে জানিয়ছিল। 

আশ্রয়ন কেন্দ্রে বর্তমান বসবাসকারী আঃ হাকিম জানান, এখানে ৩টি সেকশানে ১৯ টি ঘর তৈরি করা। পূর্ব পাশে ১ নং ঘরে আমি থাকি। ১৭টি ঘরে মানুষ আছে। সরকার পতনের পর কিছু মানুষ হঠাৎ করে এখানে এসে হুলুস্থল শুরু করেছিল। তারা একসাথে হামলা চালিয়ে ৯টি ঘরের দরজা খুলে বা তালা ভেঙ্গে ঘরের মালপত্র বাইরে ফেলে দিয়ে ঘর দখল করে নেয়। নতুন করে মাটির বাঁধ দিয়েছে। এতে ১০ টি ঘর এলাকার পানি সরতে পারছেনা। 

সরজমিন গেলে দেখা যায়, ঘর জবর দখল করা, সেখানের বালি কেটে নিয়ে আশ্রয় প্রকল্পের বাইরে ব্যক্তি কাজে ব্যবহার করায় গর্তের সৃষ্টি ও প্রকল্পের ঞরগুলোকে ক্রমে ক্রমে হুমকিগ্রস্থ করে তোলা হচ্ছে। এছাড়া একটি অংশে মাটির বাঁধ দিয়ে আটকে দেওয়ায় কিছু ঘর ও এলাকার পানি সরতে পারছেনা। গর্ত সৃষ্টি হওয়ায় পানি জমে আস্তে আস্তে ভরাট করা বালি অপসারন হলে ঘুরগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। ঘর থেকে বিতাড়িতরা কাঁদতে কাঁদতে জানায়, আমাদের ভিটেবাড়ি, নিজের জমি বলতে কিছুই নেই। সরকার আমাদের ঠাঁই দিল, কিন্তু কেন আমাদের মত অসহায়দেরকে বিতাড়িত করা হলো? আমরা গন্যমান্য ব্যক্তি, চেয়ারম্যান মেম্বার ও সরকারি কর্মকর্তাদেরকে বলেছি। কিন্তু দীর্ঘ দিনে কোন ব্যবস্থা হয়নি। 

এব্যাপারে সহকারী কমিশনার (ভূমি) রাশেদ হোসাইন জানান, শীতলপুর শুধু নয়, আশাশুনির সকল আশ্রয়ন প্রকল্পের আওতায় কাদের ঘর দেওয়া হয়ে, কারা সেখানে বসবাস করছে, কাদের বৈধতা বা অবৈধ ভাবে আছে সবকিছু তদন্ত করা হবে। কেউ অবৈধ ভাবে থাকলে তাদেরকে সরিয়ে দেওয়া হবে। আগামী সপ্তাহে সবগুলোর প্রকৃত চিত্র আমরা সামনে আনতে পারবো আশা করছি।

সর্বশেষ
logo
প্রকাশকঃ অধ্যাপক ড. জোবায়ের আলম
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকঃ তাপস রায় সরকার
মোবাইল: +৮৮০ ১৭৩৬ ৭৮৬৯১৫
কার্যালয় : বিটিটিসি বিল্ডিং (লেভেল:০৩), ২৭০/বি, তেজগাঁও (আই/এ), ঢাকা-১২০৮
মোবাইল: +880 2-8878026, +880 1736 786915, +880 1300 126 624
ইমেইল: tbtbangla@gmail.com (online), ads@thebangladeshtoday.com (adv) newsbangla@thebangladeshtoday.com (Print)
বাংলাদেশ টুডে কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি ও বিষয়বস্তু অন্য কোথাও প্রকাশ করা বে-আইনী।
Copyright © 2025 The Bangladesh Today. All Rights Reserved.
Host by
linkedin facebook pinterest youtube rss twitter instagram facebook-blank rss-blank linkedin-blank pinterest youtube twitter instagram