

সব ধরনের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে ডিসেম্বরের মধ্য পাঁচ ব্যাংকের আমানতকারীদের অর্থ ফেরত দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর। তিনি বলেন, এই সময়সীমার মধ্যে আমানতকারীদের অর্থ নিশ্চিতভাবে ফেরত দেওয়ার পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। গভর্নরের সঙ্গে সম্মিলিত ইসলামী ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের প্রথম বৈঠকে এ নির্দেশনা দেওয়া হয়।
গতকাল বুধবার ব্যাংকের প্রথম পরিচালনা পর্ষদ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
এতে সভাপতিত্ব করেন ব্যাংকের চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ আইয়ুব মিয়া। সভায় আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. হাফিজ আহমেদ চৌধুরী, প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের সচিব মো. সাইফুল্লাহ পান্না, ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. কামাল উদ্দিন, অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব মো. শাহরিয়ার কাদের ছিদ্দিকী এবং যুগ্ম সচিব মোহাম্মদ রাশেদুল আমিন ও শেখ ফরিদ উপস্থিত ছিলেন। এ ছাড়া বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর, ডেপুটি গভর্নর ড. মো. কবির আহাম্মদ, বিআরডির দায়িত্বপ্রাপ্ত নির্বাহী পরিচালক মো. রফিকুল ইসলাম, ব্যাংক রেজল্যুশন ডিপার্টমেন্টের পরিচালক ও কর্মকর্তা এবং রেজল্যুশনের অধীন পাঁচ ব্যাংকের প্রশাসকরাও সভায় উপস্থিত ছিলেন। সভায় প্রথমে পরিচালকদের রেজল্যুশনের আওতায় সম্মিলিত ইসলামী ব্যাংকের বিষয়ে এখন পর্যন্ত গ্রহণ করা পদক্ষেপ জানানো হয়।
এরপর গভর্নর উপস্থিত ব্যক্তিদের দ্রুত আইটি সিস্টেম ইন্টিগ্রেশনের কাজ সম্পূর্ণ করতে বলেন, যাতে করে আমানতের অর্থ ফেরত দেওয়াসহ কোনো পদক্ষেপ নিতে প্রযুক্তিগত সমস্যা না হয়।
নতুন করে গঠিত ব্যাংকের জন্য একটি একক ও সমন্বিত এইচআর নীতিমালা প্রণয়নের নির্দেশও দেওয়া হয়। বর্তমানে একীভূত হওয়া পাঁচটি ব্যাংকে পদবি, গ্রেড ও পদোন্নতি ব্যবস্থায় ভিন্নতা থাকায় এসব বিষয় একক কাঠামোর আওতায় আনতে হবে। পাঁচ ব্যাংকের কর্মকর্তাদের জন্য একটি অভিন্ন পদবিকাঠামো, স্বচ্ছ পদোন্নতি ব্যবস্থা ও বেতন গ্রেড সিস্টেম চালু করতে হবে।
বাংলাদেশ ব্যাংক নীতিমালা বাস্তবায়নে নজরদারি করবে। সব ধরনের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে ডিসেম্বরের মধ্যে আমানতকারীদের অর্থ ফেরত দিতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি গ্রাহকরা যেন আগের ইস্যু করা চেক ব্যবহার করেই টাকা তুলতে পারেন, তা নিশ্চিত করার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।
আগামী জানুয়ারিতে সম্মিলিত ইসলামী ব্যাংক আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হবে। তবে উদ্বোধনের আগেই আমানতকারীরা অর্থ ফেরত পাবেন বলে জানানো হয়।
সভায় উপস্থিত পর্ষদ গভর্নরের সঙ্গে একমত পোষণ করে আমানতকারীদের স্বার্থ রক্ষায় সম্মিলিত ইসলামী ব্যাংক সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেবে বলে অঙ্গীকার করে।
গত আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে কয়েকটি প্রভাবশালী গ্রুপ জালিয়াতির মাধ্যমে ডজনখানেক ব্যাংক থেকে বিপুল পরিমাণ ঋণ তুলে নেয়। এসব অনিয়ম ও ঋণ কেলেঙ্কারির চাপেই ব্যাংকগুলো ধীরে ধীরে গভীর সংকটে পড়ে। এর মধ্যে সংকটে থাকা পাঁচটি ব্যাংক একত্র করে ‘সম্মিলিত ইসলামী ব্যাংক’ গঠনের অনুমতি দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। পাঁচটি ব্যাংক হলো—এক্সিম, সোশ্যাল ইসলামী, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী, গ্লোবাল ইসলামী ও ইউনিয়ন ব্যাংক।
সম্মিলিত ইসলামী ব্যাংক পিএলসির পরিশোধিত মূলধন নির্ধারণ করা হয়েছে ৩৫ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে সরকার দিচ্ছে ২০ হাজার কোটি এবং আমানতকারীদের শেয়ার থেকে আসবে বাকি ১৫ হাজার কোটি টাকা। অনুমোদিত মূলধন রাখা হয়েছে ৪০ হাজার কোটি।

