ছেলের বিলাসবহুল জীবনযাত্রার ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়ার জেরে ব্যাপক গণবিক্ষোভ ও দুর্নীতিবিরোধী তদন্তের মুখে ক্ষমতাচ্যুত হতে হয়েছে মঙ্গোলিয়ার প্রধানমন্ত্রী লুভসাননামসরাইন ওইয়ুন-এর্ডেনকে।
মঙ্গলবার (৩ মে) পার্লামেন্টে আস্থাভোটে হেরে গিয়ে পদত্যাগ করেছেন তিনি। ভোটে অংশ নেওয়া ৮৮ জন এমপির মধ্যে ৪৪ জন তার পক্ষে ভোট দিলেও ৩৮ জন ছিলেন তার বিপক্ষে। ১২৬ আসনের পার্লামেন্টে ক্ষমতায় থাকতে হলে তার অন্তত ৬৪ জন সদস্যের সমর্থন প্রয়োজন ছিল। খবর বিবিসির।
আস্থাভোটে হেরে যাওয়ার পর এক বিবৃতিতে মঙ্গোলিয়ার প্রধানমন্ত্রী বলেন, মহামারি, যুদ্ধ ও শুল্কের মতো কঠিন সময়ে জাতির সেবা করতে পেরে গর্বিত।
সম্প্রতি ওইয়ুন-এর্ডেনের ছেলের এবং তার বান্ধবীর বিলাসী জীবনযাত্রার ছবি ভাইরাল হলে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। প্রধানমন্ত্রীর পরিবারের আয়-ব্যয়ের স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন বিক্ষোভকারীরা।
আলোচিত ছবিতে দেখা যায়, ওইয়ুন-এর্ডেনের ছেলের বান্ধবী একটি কালো ডিওর ব্যাগ ও একাধিক ব্যয়বহুল কেনাকাটার ব্যাগ হাতে নিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন, সঙ্গে ক্যাপশন: ‘হ্যাপি বার্থডে টু মি’। আরেক ছবিতে সেই জুটিকে সুইমিং পুলে চুম্বনরত অবস্থায় দেখা যায়।
এই ছবিগুলো প্রথমে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে, পরে স্থানীয় সংবাদমাধ্যমেও প্রকাশিত হয়।
এরপর প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে শত শত তরুণ বিক্ষোভে অংশ নিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর পরিবারের আর্থিক লেনদেন নিয়ে তদন্ত শুরু করে দুর্নীতিবিরোধী সংস্থাও। যদিও ওইয়ুন-এর্ডেন দুর্নীতির অভিযোগ অস্বীকার করেন এবং তার বিরুদ্ধে ‘ষড়যন্ত্রমূলক প্রচারণা’ চালানোর অভিযোগ আনেন।
ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের মতে, ওইয়ুন-এর্ডেনের শাসনামলে মঙ্গোলিয়ায় দুর্নীতির চিত্র আরও খারাপ হয়েছে। গত বছর ১৮০টি দেশের মধ্যে মঙ্গোলিয়ার অবস্থান ছিল ১১৪তম।
সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর ১৯৯০-এর দশকে গণতন্ত্রের পথে যাত্রা শুরু করে রাশিয়া ও চীনের মাঝে অবস্থিত দেশটি। কিন্তু দুর্নীতি দেশটির এখনও অন্যতম প্রধান সমস্যা।
মঙ্গোলিয়া সাম্প্রতিক বছরগুলোতে পশ্চিমা দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক জোরদারে উদ্যোগ নিয়েছে এবং যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় দেশগুলোকে তাদের ‘তৃতীয় প্রতিবেশী’ হিসেবে বিবেচনা করে।