ঢাকা
৩০শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
দুপুর ২:৪৭
logo
প্রকাশিত : এপ্রিল ২৮, ২০২৫

গৌরীপুরে সংযোগ সড়ক ধসে পড়ায় সাড়ে পাঁচ কোটি টাকার সেতু অচল

গৌরীপুর (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি: ময়মনসিংহের গৌরীপুরের মাওহা ইউনিয়নে সুরিয়া নদীর ওপর সাড়ে পাঁচ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত পাকা সেতুর সংযোগ সড়ক ধসে পড়ায় জনসাধারণের কোনো কাজে আসছে না। সংযোগ সড়কটির জায়গায় জায়গায় বড় বড় গর্ত তৈরি ও সেতুর মুখের অধিকাংশ সড়ক ধসে পড়ায় সেতুর ওপর দিয়ে বড় যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। শুধুমাত্র দু'চাকার যান ও পায়ে হেটে মানুষ চলাচল করতে পারছে। সময় বাঁচাতে ধসে পড়া সড়ক দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে রিকশা, ইজিবাইক ও মোটরসাইকেল চলাচল করছে। এতে করে প্রায়ই ঘটছে ছোট-খাটো দুর্ঘটনা।

এলাকবাসী জানায়, সেতু নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার এক বছরের মাথায় ভারী বর্ষণে সেতুর সংযোগ সড়কের বিভিন্ন স্থানে গর্ত ও ধস দেখা দেয়। সংস্কার না হওয়ায় ইট খসে পড়ে দিন দিন সংযোগ সড়কটি সরু হয়ে যাচ্ছে। চুরি হয়ে যাচ্ছে সংযোগ সড়কের ইট। বছর খানেক ধরে সেতুটি গ্রামবাসীর খড় ও ফসল শুকানোর কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে।

উপজেলার মাওহা ইউনিয়নের নয়ানগর বাউশালীপাড়া ও খলতবাড়ি গ্রামের মাঝখান দিয়ে বয়ে গেছে সুরিয়া নদী। দুই পাড়ের দশটি গ্রামের মানুষের চলাচল, কৃষি পণ্যসহ অন্যান্য মালপত্র স্থানান্তরের জন ছিল না কোনো সেতু। এই দশ গ্রামের মানুষের জন এলজিইডি ২০২৩ সালে এই সেতুটি নির্মাণ করে।

এলজিইডি গৌরীপুর উপজেলা কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০২১ সালের ২৬ এপ্রিল বাংলাদেশ সরকার ও বিশ্বব্যাংকের উদ্যোগে সুরিয়া নদীর ওপর সেতু নির্মাণ কাজ শুরু হয়। ৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের সেতুটি নির্মাণ করা হয় পালুহাটি-মাওহা আঞ্চলিক সড়কে মাওহা ইউনিয়নের নয়ানগর ও খলতবাড়ি গ্রামের সংযোগস্থলে। ৫ কোটি ৫৩ লাখ ৯৫ হাজার ৫৫৪ টাকা ৫৪ পয়সা ব্যয়ে সেতু নির্মাণকারী ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ছিলো সোহেল এন্টারপ্রাইজ। ২০২৩ সালে ১০ মার্চ সেতু নির্মাণ কাজ শেষ হয়।

সুরিয়া নদীর ওপর সেতুটি নির্মাণ হওয়ায় গৌরীপুর উপজেলাসহ নেত্রকোণার সঙ্গে আঞ্চলিক যোগযোগ ব্যবস্থায় নতুন দ্বার উন্মোচিত হয়। কিন্ত সেতু নির্মাণের এক বছরের মাথায় সেতুর সংযোগ সড়কে গর্ত ও ধস দেখা দেয়। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ সংস্কার না করায় সংযোগ সড়কে সৃষ্ট গর্তগুলো বড় হয়ে ইটসহ ধসে পড়তে থাকে। এরমধ্যে নয়ানগর বাউশালিপাড়া অংশের সংযোগ সড়কের বড় অংশ ধসে পড়ে গেছে। এছাড়াও সেতুর গাইড ওয়ালের বিভিন্ন স্থানে ফাটল ও ইট খসে পড়ে গেছে। সড়কে সৃষ্টি হয়েছে বড় গর্ত। এতে করে সড়কটি সরু হয়ে যাওয়ায় বড় ধরনের যান চলাচল বন্ধ রয়েছে।

এক বছর ধরে সেতুটি গ্রামবাসীর খড় ও ফসল শুকানোর কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে। গ্রামবাসী জানান, বিকল্প পথে উপজেলা শহর সহ নেত্রকোণা যাতায়াত করতে অনেকটা পথ ঘুরতে হয়। তাই সময় বাঁচাতে ধসে পড়া সড়ক দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে রিকশা, ইজিবাইক ও মোটরসাইকেল চলাচল করছে। এতে করে প্রায়ই ঘটছে ছোট-খাটো দুর্ঘটনা।

স্থানীয় বাসিন্দা শেখ সাদী বলেন, সুরিয়া নদীর ওপর সেতু নির্মাণ হওয়ায় দুইপাড়ের মানুষের মধ্যে আনন্দের বন্যা বইছিল। কিন্ত সেতুর সংযোগ সড়ক ধসে পড়ায় মানুষ সেতুর সুফল থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। নির্মাণ কাজে অনিয়মের কারণে নির্মাণের এক বছরের মাথায় সংযোগ সড়ক ধসে পড়ছে কি-না সেটাও খতিয়ে দেখা দরকার। বর্ষার আগেই সংযোগ সড়ক সংস্কার করা না হলে ধসে পড়া সড়ক সুরিয়ায় বিলীন হয়ে যেতে পারে বলে জানান তিনি।

স্থানীয় বাসিন্দা আজহারুল করিম বলেন, মাওহা ইউনিয়নের বাউশালীপাড়া ও খলতবাড়ি সংযোগস্থলে নির্মিত সেতুর আশেপাশে নির্জন। তাই রাতের বেলায় সংযোগ সড়কের গর্ত ও ধসে পড়া ইট চুরি করে নিয়ে যাচ্ছে চোর। এতে করে গর্ত আরও বড় হচ্ছে। এসব বিষয়ে কর্তৃপক্ষের পদক্ষেপ নেয়া প্রয়োজন। বর্ষার আগেই সড়ক সংস্কার না করলে দুই পাড়ের মানুষের ভোগান্তি আরও বাড়বে।

উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিইডি) অসিত বরণ দেব জানান, ইতিমধ্যে এলজিইডি ও বিশ্বব্যাংকের প্রতিনিধি দল সেতুর ধসে যাওয়া সংযোগ সড়ক পরিদর্শন করেছে। সড়ক মেরামতের জন্য প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। বরাদ্দ পেলেই কাজ শুরু করা হবে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার এম সাজ্জাদুল হাসান বলেন, জনসাধারণের দুর্ভোগ লাঘব করতে সড়ক সংস্কারের বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। সড়কের ইট চুরি রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান তিনি।

logo
প্রকাশকঃ অধ্যাপক ড. জোবায়ের আলম
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকঃ তাপস রায় সরকার
মোবাইল: +৮৮০ ১৭৩৬ ৭৮৬৯১৫
কার্যালয় : বিটিটিসি বিল্ডিং (লেভেল:০৩), ২৭০/বি, তেজগাঁও (আই/এ), ঢাকা-১২০৮
মোবাইল: +880 2-8878026, +880 1736 786915, +880 1300 126 624
ইমেইল: tbtbangla@gmail.com (online), ads@thebangladeshtoday.com (adv) newsbangla@thebangladeshtoday.com (Print)
বাংলাদেশ টুডে কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি ও বিষয়বস্তু অন্য কোথাও প্রকাশ করা বে-আইনী।
Copyright © 2025 The Bangladesh Today. All Rights Reserved.
Host by
linkedin facebook pinterest youtube rss twitter instagram facebook-blank rss-blank linkedin-blank pinterest youtube twitter instagram