সোহেল তালুকদার, শান্তিগঞ্জ প্রতিনিধি : সুনামগঞ্জ জেলার শান্তিগঞ্জ উপজেলার শান্তিগঞ্জ-রজনীগঞ্জ সড়কে সংস্কার কাজ দ্রুত শেষ না হওয়ায় সড়কজুড়ে সৃষ্টি হয়েছে অসংখ্য খানাখন্দ। এক বছর আগে সংস্কার কাজ শুরু করলেও সংস্কার কাজ শুরু থেকে কচ্ছপ গতিতে চলছে নির্মাণ কাজ। যার ফলে সড়কে ছোট-বড় অসংখ্য গর্ত ও কাদামাটিতে ভরপুর হওয়ায় এলাকাবাসীকে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ সূত্রে জানা যায়, শান্তিগঞ্জ স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের (এলজিইডি) অধীন গত বছর শান্তিগঞ্জ উপজেলায় শান্তিগঞ্জ-রজনীগঞ্জ সড়ক শান্তিগঞ্জ বাজার থেকে ডুংরিয়া হাইস্কুল সংলগ্ন ব্রীজের পূর্ব পার্শ্ব পর্যন্ত আড়াই কিলো মিটার রাস্তা প্রায় ১১ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ কাজ শুরু হয়। কাজটি ঢাকার একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স সালেহ এন্ড ব্রাদার্স বাস্তবায়ন করলেও সার্বক্ষণিক শান্তিগঞ্জ উপজেলা এলজিইডি বিভাগ দেখভাল করে আসছে। গতবছর আরসিসি ঢালাই রাস্তাটি ২শ মিলি মিটার অর্থাৎ প্রায় ৮ ইঞ্চি পরো এবং ৫.৫ মিলি মিটার অর্থাৎ প্রায় ১৮ ফুট প্রশস্ত সড়কের কাজ শুরু হলেও সড়কের দুই পাশের গাছ কাটা নিয়ে জটিলতার কারণে নির্মাণ কাজে বিঘ্নতা সৃষ্টি হয়। তবে সড়কের দুই পাশের গাছ কাটার কোন সুরাহা না হওয়ায় চলতি বছরের শুরুর দিকে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের লোকজন পুরোধমে রাস্তাটি নির্মাণ কাজ শুরু করে এবং উক্ত সড়কের একটি ব্রীজ নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করে। কাজটি চলতি বছরের মে মাসে মেয়াদ শেষ হলেও প্রায় এক কিলো মিটারের অধিক রাস্তা নির্মাণ কাজ এখনো সম্পন্ন করা সম্ভব হয়নি।
সরেজমিনে সড়কটি ঘুরে দেখো গেছে, সড়কটির ডুংরিয়া হাইস্কুল সংলগ্ন ব্রীজ থেকে শিবপুর গ্রামের রায়হান আহমদের বাড়ী সংলগ্ন ব্রীজের পশ্চিম পাশে এবং ব্রীজের পূর্ব পাশ থেকে শিবপুর মধ্যপাড়া জামে মসজিদের পশ্চিম পর্যন্ত সড়কটির ঢালাই এর কাজ সম্পন্ন হয়েছে। অপর দিকে শিবপুর ভাঙ্গাপুল(নতুন ব্রীজ) এর সামন থেকে শান্তিগঞ্জ পর্যন্ত সড়কের প্রায় দেড় কিলো মিটার এখনো ছোট-বড় অসংখ্য গর্ত ও কাদামাটিতে ভরপুর হয়ে আছে। তবে শিবপুর গ্রামের ইসরাইল মিয়ার বাড়ীর সামন থেকে ইলিয়াছ মিয়ার বাড়ীর সামন পর্যন্ত সড়কের এক পাশে আরসিসি ঢালাই এর কাজ সম্পন্ন হলেও অপর পাশে ছোট-বড় অসংখ্য খানাখন্দের সৃষ্টি হয়ে কাদামাটিতে কর্দমাক্ত হয়ে যান চলাচল করা প্রায় অসম্ভব হয়ে দাড়িয়েছে। এতে সড়কটির একাধিক স্থানে ছোট-বড় অসংখ্য খানাখন্দের কারণে ওই সড়ক দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে এলাকাবাসীকে চলাচল করতে হয়। রোদ্রে ধূলাবালি ও বৃষ্টিতে সড়কের বিভিন্ন স্থানে গর্তের সৃষ্টি হওয়ায় সড়কে পানি জমে থাকে। এতে পথচারী ও যানবাহন চলাচল করতে অসুবিধার সৃষ্টি হয়। তা ছাড়া প্রায় সময়ই সড়কের গর্তে যানবাহন আটকে যায়। প্রসূতিসহ জরুরি রোগীদের ওই সড়ক দিয়ে আনা-নেওয়ার ক্ষেত্রে খুবই কষ্ট হয়।ওই সব গর্তে পানি জমে রয়েছে। আবার কোথাও কাদায় পরিপূর্ণ। গর্তে অটোরিকশা, পিকআপ আটকে গেছে।
ডুংরিয়া গ্রামের সিএনজি চালক আবুল হাসনাত বলেন, এই সড়ক দিয়া যাত্রী নিয়ে সিএনজি গাড়ী চালানো আমাদের জন্য খুব কষ্টকর। সামান্য বৃষ্টি হলেই রাস্তার বড় বড় গর্তে পানি জমে যায় এবং কর্দমাক্ত হয়ে পড়ে। বিশেষ করে রোগী ও গর্ভবতী মহিলারা খুবই কষ্টে সম্মুখীন হন।
শান্তিগঞ্জ স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের সাবস্টেশন ইঞ্জিনিয়ার শাহীনুর রহমান শাহীন বলেন, শান্তিগঞ্জ থেকে ডুংরিয়া পর্যন্ত সড়কের রাস্তার একপাশ একপাশ করে রাস্তায় আরসিসি ঢালাই কাজ চলমান রয়েছে। যার ফলে একপাশ দিয়া অধিক যান বাহন চলাচলের ফলে গর্ত ও কাদামাটির সৃষ্টি হয়েছে। ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ১০/১২ দিন কাজ বন্ধ ছিল। এখন পুরোদমে কাজ শুরু হয়েছে। আমি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে বলে দিয়েছি দ্রুত সময়ের মধ্যে গর্ত ভরাট, রাস্তা দিয়া যান বাহন চলাচল স্বাভাবিক করে হবে।
শান্তিগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী মো. সাজেদুল আলম জানান, সড়কের দুই পাশে অসংখ্য গাছ রয়েছে, আমাদের সড়কটি পুরো নির্মাণ করতে হলে গাছ গুলো কেটে তার পর নির্মাণ করতে হবে। গাছ কাটা নিয়্র দীর্ঘদিন ধরে জটিলতা সৃষ্টি হওয়ার কারণে সড়কটি নির্মাণ করতে বিলম্ব হচ্ছে। এখন যেহেতু গাছ গুলো কাটার ব্যাপারে কোন সিদ্ধান্ত হয়নি তাই আমরা সড়কের একটি সাইট আমরা বাস্তবায়ন করছি। গাছের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হলে পরে অপরাংশ বাস্তবায়ন করতে পারবো। এমনিতেই সড়কটি অনেক ক্ষতিগ্রস্ত, সড়কটি দিয়ে মানুষজন যাতায়াত করতে খুবই কষ্ট হয়। আমরা চাই দ্রুত সময়ের মধ্যে যেন পরিবেশ অধিদপ্তর আমাদের সড়কের পাশে যে গাছ গুলো আছে সেগুলোর ব্যাপারে সিদ্ধান্ত দিয়ে মানুষের দুর্ভোগ লাগব করবেন।