ছায়েদ আহামেদ, হাতিয়া (নোয়াখালী) প্রতিনিধি: হাতিয়ায় সংরক্ষিত সরকারি বাগানে রাতের আঁধারে গাছ কেটে বন পরিস্কার করার অপরাধে জাহাজমারা সদর বিটের ফরেস্টার বাদী হয়ে হাতিয়া থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলার প্রধান আসামি মো:জাবের হোসেনকে সোমবার (২৪ মার্চ) দুপুরে আদালতে সোপর্দ করা হয়।
এর আগে গতকাল দুপুরে আসামির বাড়ি থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে সংশ্লিষ্ট থানা পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃত আসামি জাহাজমারা ইউনিয়ন ৩নং ওয়ার্ড চরহেয়ার গ্রামের মৃত খবির উদ্দিনের ছেলে। মামলার অপর আসামিরা একই ওয়ার্ডের মৃত নুরুল ইসলামের ছেলে আবুল কাশেম এবং মোঃ জাবের হোসেনের ছেলে আজগর হোসেন সহ অজ্ঞাত আরো ৫/৬ জন।
মামলার এজাহার এবং জাহাজমারা ফরেস্ট অফিস থেকে জানা যায়, চলতি মাসের ১৮ তারিখে বিশ্বস্ত সূত্রের সংবাদের ভিত্তিতে বিট অফিসার বোখারী আহমেদ টহল স্টাফ সহ চর ইউনুছ হাজীর গোপট এলাকায় টর্চ লাইটের আলোতে দেখতে পান চিহ্নিত ৩ আসামি ছাড়াও মুখোশপরা ৫/৬জন লোক ইলেকট্রনিক করাত ও কুড়াল দিয়ে গাছ কাটছে। কেউ কেউ দা দিয়ে গেওয়া গাছ কেটে বনভূমি পরিস্কার করছে। এসময় বনরক্ষীদের উপস্থিতি টের পান তারা। আসামিরা গালিগালাজ করে একপর্যায়ে আক্রমনের জন্য দা, কুড়াল নিয়ে এগিয়ে আসলে বনরক্ষীরা ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন। পরদিন সকাল ৭টার সময় বনরক্ষী ও টহল স্টাফসহ ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখেন আসামিদের কাটা ৮০০টি ১ ফুট বেড়ের গেওয়া গাছ ও ৩২টি কেওড়া গাছ। যা ঘটনাস্থল থেকে পরিবহন করতে অসুবিধা হওয়ায় পতিত অবস্থায় রেখে চলে আসেন তারা।
আসামিগণ ভূমি জবরদখলের উদ্দেশ্যে প্রায় ১.৫০ একর জমির ১ফুট বেড়ের ৮০০টি গেওয়া গাছ এবং ৩২টি কেওড়া গাছ বন পরিস্কার করে ফেলেছে। এছাড়া বন ও পরিবেশের ক্ষতি মিলিয়ে সরকারি বাগানের ক্ষয়ক্ষতির বিবরণে সর্বমোট ২১ লাখ ৪১ হাজার ৬৮০ টাকার পরিমাণ উল্লেখ করা হয়েছে। এ ঘটনায় ২০ মার্চ ফরেস্টার বোখারী আহমেদ বাদী উল্লেখিত আসামিরা ছাড়াও ৫/৬ জনকে অজ্ঞাত করে মামলা দেন।
এদিকে, বনের মধ্যকার খালে মাছ ধরা এবং মধু সংগ্রহের জন্য রাজনৈতিক দলের পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন ব্যক্তি বনরক্ষকীদের নানা ভাবে হুমকি দিয়ে আসছে। এ বিষয়ে ২৩ মার্চ হাতিয়া থানায় একটি জিডি করেন সহকারী বনরক্ষক একেএম আরিফ-উজ-জামান।
জাহাজমারা রেঞ্জ কর্মকর্তা এস এম সাইফুর রহমান জানান, আসামিরা সংরক্ষিত বনে অনধিকার প্রবেশ করে সরকারি গাছ কেটে পরিবেশ ও রাষ্ট্রের ক্ষতিসাধন করেছে। বনের জমি জবরদখলের চেষ্টা করায় তাদের বিরুদ্ধে ১৯২৭ সালের বন আইনে (২০০০ সালে সংশোধিত) মামলা করা হয়। তিনি আরো জানান, এজাহারে উল্লেখিত বাকী আসামিদের গ্রেপ্তারের ব্যপারে পুলিশ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন এবং বনে তাদের টহল প্রক্রিয়া জোরদার করেছেন।