খ্যাতিমান ব্রিটিশ-ভারতীয় লেখক সালমান রুশদিকে ছুরিকাঘাতে হত্যাচেষ্টা ও হামলার ঘটনায় নিউ জার্সির এক ব্যক্তিকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। ২৭ বছর বয়সী হাদি মাতারের ৩০ বছরেরও বেশি কারাদণ্ড হতে পারে। আগামী ২৩ এপ্রিল তার সাজা ঘোষণার দিন ঠিক করা হয়েছে।
২০২২ সালের আগস্ট মাসের ওই হামলায় সালমান গুরুতর আহত হন। তার লিভার ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পাশাপাশি একটি চোখে দৃষ্টিশক্তি হ্রাস পায়। আর একটি হাতের স্নায়ু ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় তা পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়। পশ্চিম নিউ ইয়র্ক রাজ্যের শাটাকোয়া কাউন্টি আদালতে দুই সপ্তাহের শুনানি শেষে মাতারকে দোষী সাব্যস্ত করেন বিচারকরা। ঘটনার দিন লেখকের সঙ্গে মঞ্চে থাকা সাক্ষাৎকার গ্রহণকারী হেনরি রিসকে আহত করার জন্যও মাতারকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। হামলার সময় রিসের মাথায় সামান্য আঘাত লাগে।
শুনানির সমাপনী যুক্তিতর্ক চলাকালে কৌঁসুলি জেসন স্মিড হামলার একটি ভিডিও স্লো-মোশনে দেখান। আদালতে স্মিড বলেন, “আমি চাই, আপনারা হামলার নিশানার ধরন খতিয়ে দেখুন। সেদিন আশেপাশে অনেক লোক ছিল, কিন্তু সেখানে কেবল একজনকেই নিশানা করা হয়েছিল।” দুই সপ্তাহের শুনানি চলাকালে আসামিপক্ষের আইনজীবী অ্যান্ড্রু ব্রুটিগান যুক্তি দেন যে, মাতার স্যার সালমানকে হত্যা করতে চেয়েছিলেন-এমনটা প্রমাণে ব্যর্থ হয়েছেন কৌঁসুলিরা। তার আইনজীবীরা নিজেদের কোনো সাক্ষীকে ডাকতে চাননি এবং মাতার আত্মপক্ষ সমর্থন করেননি।
উল্লেখ্য, ২০২২ সালের আগস্ট মাসে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের চাটাকুয়া ইনস্টিটিউশনে এক বক্তৃতার সময় ২৭ বছর বয়সী হাদি মাতার মঞ্চে উঠে রুশদিকে একাধিকবার ছুরিকাঘাত করেন। তিনি লেখকের ঘাড়, বুক, পেট, হাত ও চোখে গুরুতর আঘাত করেন, যার ফলে রুশদি আংশিকভাবে দৃষ্টিশক্তি হারান। হামলার পরপরই তাকে গ্রেফতার করা হয় এবং তিনি শুরু থেকেই কারাগারে রয়েছেন।
আদালতে রুশদি সাক্ষ্য দিতে গিয়ে বলেন, প্রথমে তিনি ভেবেছিলেন কেউ তাকে ঘুষি মারছে, কিন্তু পরে তিনি দেখেন তার শরীর থেকে প্রচুর রক্তক্ষরণ হচ্ছে। প্রসিকিউশন পক্ষে আইনজীবীরা হামলার ভিডিও ফুটেজ উপস্থাপন করেন, যা হামলার পরিকল্পিত ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত চরিত্রকে প্রমাণ করে। তবে মাতারের আইনজীবী দাবি করেন, হত্যার সুস্পষ্ট উদ্দেশ্যের কোনো প্রমাণ নেই।
তথ্যসূত্র : বিবিসি।