ঢাকা
১১ই মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
রাত ১০:২৪
logo
প্রকাশিত : জানুয়ারি ২৯, ২০২৫

দু'টি পা নেই, তবুও থেমে নেই নগেনের জীবন সংগ্রাম

উত্তম গোলদার, মির্জাগঞ্জ (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি: সময়টা ২০০৭ সাল, সিডরের রাত। রাত তখন নয়টা, হঠাৎ করে চারিদিকে পানি আর পানি। এদিক ওদিক শুধু চিৎকার আর চিৎকার। যে যার মতো করে ছুটছে বাঁচার তাগিদে। তারমধ্যে বাঁচার তাগিদে ছুটে চলে নগেন চন্দ্র নাথ নামে এক যুবক। বয়স ৩৪ থেকে ৩৫ হবে। পানির মধ্যে ছুটে চলতে চলতে টের পেলো তাঁর পায়ে আঁচর কাটে বলে জানান সে। পরেদিন পানি কমলেও তাঁর পায়ের যন্ত্রণা কিছুতেই কমছে না। শুরু হয় পায়ে জ্বালা-যন্ত্রণা। পরে বরিশাল শেবাচিমে ডাক্তার দেখান। রিপোর্ট দেখে ডাক্তার বলেন, বিষাক্ত কিছু পায়ে কামড় দিয়েছে। কিছুদিন যেতে না যেতেই পা দুইটা ফুলে ফেটে যায়। শুরু হয় আরেক যন্ত্রণা। রাতে ঠিক মতো ঘুমাতে পারেনি। ডাক্তারের শরণাপন্ন হলে ডাক্তার জানান, পা দুইটি কেটে ফেলতে হবে। রাখলে হয় তো এক সময়ে জীবন প্রদীপ নিভে যেতে পারে।

ডাক্তারের পরামর্শ মতো পরের বছর বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে গিয়ে দুইটি পা কেটে ফেলা হয়। অতিরিক্ত বেদনানাশক ঔষধ খাওয়ায় খাদ্যনালীও ছিদ্র হয়ে যায়। পরে খাদ্যনালীও অপারেশন করা হয়। সিডরে ঘরবাড়ি হাড়ানোর বেদনা আরেকদিকে নিজের চিকিৎসার সহায় সম্বলটুকুও হারানোর উপক্রম। এখনো আর যেন পেড়ে উঠছে না নগেন। এরমধ্যে জীবন সংগ্রামের পাশাপাশি সংসারে সংগ্রাম তো আছেই। পঙ্গু হলেও জীবন-জীবিকার তাগিদে বেঁচে নেয়নি ভিক্ষাবৃত্তি। পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জ মাজার মোড়ে ছোট্ট একটি চায়ের দোকান দিয়ে চলছে ঔষধ খরচ, পরিবারের ভরণপোষণ ও ছেলের লেখাপড়া। এক সময় সুস্থ সবল জীবন ছিলো তাঁর। দিনমজুরি করে বেশ ভালোভাবেই চলছিল নগেনের জীবন। পরিবার নিয়ে সুখে-শান্তিতে দিন কাটাতো।

মির্জাগঞ্জ উপজেলার মির্জাগঞ্জ গ্রামের মহেন্দ্র চন্দ্র নাথের ছেলে তিনি। কিন্তু হঠাৎ একটা ঝড়ে তছনছ হয়ে গেল জীবনটা। নিয়তির নির্মম খেলায় শরীর থেকে বিছিন্ন আজ দু'টি পা তার। ছোট্ট এই দোকান চালিয়ে দুই মেয়ের বিবাহও দিয়েছেন। ১৮ বছরের এক ছেলে জয় দেবনাথ সুবিদখালী সরকারি কলেজের একাদ্বশ শ্রেণির শেষ বর্ষের পরীক্ষার্থী।

কান্না জড়িত কন্ঠে নগেন বলেন, এখন আমার বয়স ৫২ বছর। সিডর আমার কাছ থেকে দুইটি পা’ই কেড়ে নিয়েছে। সিডরের পর থেকে প্রায় দেড় যুগ ধরে এই যন্ত্রণা ভোগ করছি। এখন আমি খুবই অসহায় হয়ে পড়েছি। দোকান চালানোর মতো অর্থ নাই। সংসারের উপার্জনের মতো আর কেউ নেই। ভিক্ষা পছন্দ করি না। যতদিন বাঁচাবো সৎ ভাবে পরিশ্রম করে চলবো। কিছু সহযোগিতা পেলে দোকানে মালামাল উঠাতাম। শুধু বসবাসের জন্য মাত্র ৭ শতাংশ জমি ছাড়া অন্য কোন সম্পদ নাই। উপজেলা নির্বাহী অফিসার স্যারের নিকট কিছু সহায়তা চেয়ে আবেদন করেছি।

ইউএনও মোঃ তরিকুল ইসলাম বলেন, তাঁর খোঁজ খবর নিয়ে আমরা তাকে সহায়তা প্রদানের চেষ্টা করবো।

সর্বশেষ
logo
প্রকাশকঃ অধ্যাপক ড. জোবায়ের আলম
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকঃ তাপস রায় সরকার
মোবাইল: +৮৮০ ১৭৩৬ ৭৮৬৯১৫
কার্যালয় : বিটিটিসি বিল্ডিং (লেভেল:০৩), ২৭০/বি, তেজগাঁও (আই/এ), ঢাকা-১২০৮
মোবাইল: +880 2-8878026, +880 1736 786915, +880 1300 126 624
ইমেইল: tbtbangla@gmail.com (online), ads@thebangladeshtoday.com (adv) newsbangla@thebangladeshtoday.com (Print)
বাংলাদেশ টুডে কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি ও বিষয়বস্তু অন্য কোথাও প্রকাশ করা বে-আইনী।
Copyright © 2025 The Bangladesh Today. All Rights Reserved.
Host by
linkedin facebook pinterest youtube rss twitter instagram facebook-blank rss-blank linkedin-blank pinterest youtube twitter instagram