ঢাকা
৮ই জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
দুপুর ১২:১৫
logo
প্রকাশিত : জানুয়ারি ১৩, ২০২৫

কিয়ার স্টারমার কি টিউলিপকে বরখাস্ত করতে পারবেন?

যুক্তরাজ্যের সিটি মিনিস্টিার টিউলিপ সিদ্দিককে বরখাস্ত করার জন্য দেশটির প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের ওপর নানামুখী চাপ বাড়ছে। টিউলিপকে নিয়ে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের মন্তব্যের পর এ চাপ আরো বেড়েছে।

যুক্তরাজ্যের বিরোধীদলীয় নেতা কেমি বেইদেনক টিউলিপ সিদ্দিকের বিষয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে তার এক্স অ্যাকাউন্টে এক পোস্টে বলেন, এখন কিয়ার স্টারমারের টিউলিপ সিদ্দিককে বরখাস্ত করার সময় এসেছে। ড. ইউনূসের মন্তব্যের পর তিনি এই বিবৃতি দেন।

পোস্টে কেমি বেইদেনক অভিযোগ করেন, দুর্নীতির অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও স্টারমার তার ‘ব্যক্তিগত বন্ধু’ টিউলিপকে দুর্নীতি দমনের দায়িত্ব দিয়ে মন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন। এখন বাংলাদেশ সরকার শেখ হাসিনার শাসনামলের সঙ্গে তার যোগসূত্র নিয়ে গুরুতর উদ্বেগ প্রকাশ করছে।

এমন অবস্থায় কিয়ার স্টারমার টিউলিপকে বরখাস্ত করতে পারবেন কি না। যুক্তরাজ্যের সংবাদমাধ্যম দ্য টেলিগ্রাফ জানায়, কিয়ার স্টারমার এবং টিউলিপের রাজনৈতিক বন্ধুত্ব সেই ২০১৪ সাল থেকে।

তাদের বন্ধুত্ব আরো মজবুত হয়, যখন ২০১৫ সালের নির্বাচনে একই রাতে তারা একসঙ্গে পার্লামেন্টে প্রবেশ করেছিলেন। সেই বছরের শেষের দিকে তারা উভয়েই জেরেমি করবিনকে সমর্থন জানান।

২০২০ সালের শুরুর দিকে যখন পার্টির শীর্ষ নেতা নির্বাচনের সময় এলো তখন টিউলিপ সিদ্দিক প্রকাশ্যে কিয়ের স্টারমারকে মনোনীত করেছিলেন। তার প্রার্থিতাকে লেবার ফ্রেন্ডস অব বাংলাদেশও সমর্থন করেছিল।

স্টারমার যখন নির্বাচিত হয়েছিলেন, ক্যামডেন নিউ জার্নালকে টিউলিপের সঙ্গে বন্ধুত্বের কথা বলেছিলেন। পার্লামেন্টে মাত্র কয়েকজন সংসদ সদস্যের মধ্যে একজন, যাকে প্রধানমন্ত্রী সহকর্মীদের বিপরীতে ব্যক্তিগত বন্ধু হিসেবে গণ্য করেন— তিনি হলেন টিউলিপ।

২০১৮ সালের মে মাসে যখন স্টারমার স্থানীয় নির্বাচনের প্রচারণায় যোগ দিয়েছিলেন, তখন তিনি টিউলিপকে ভালো বন্ধু এবং সহকর্মী বলে বর্ণনা করেছিলেন। এমনকি তারা দুই পরিবার একে অপরের সঙ্গে সময় কাটান এবং ছুটির দিনও তারা একসঙ্গে উদযাপন করেন।

এদিকে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ডেইলি মেইল জানিয়েছে, ব্রিটিশ লেবার পার্টির টিকিটে প্রথমবার এমপি হওয়ার পর কিয়ার স্টারমার তার প্রথম বিদেশ সফরে যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স বা জার্মানির মতো ঘনিষ্ঠ মিত্র দেশে না গিয়ে বহু দূরের দেশ বাংলাদেশে এসেছিলেন।

২০১৬ সালে বাংলাদেশ সফরের সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গেও সাক্ষাৎ করেন এমপি কিয়ার স্টারমার। কয়েক মাস পর হাসিনার দল আওয়ামী লীগের যুক্তরাজ্য শাখার একদল প্রতিনিধি স্টারমারের পরবর্তী নির্বাচনের জন্য তহবিল সংগ্রহের ডিনারে যোগ দেন। ২০১৯ সালের নির্বাচনে হাসিনার দলের প্রবাসী কর্মীরা মহাসমারোহে যোগ দেন স্টারমারের নির্বাচনী প্রচারে।

২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে রানির শেষকৃত্যে যোগ দিতে লন্ডনে যান শেখ হাসিনা। সে সময় হোটেলকক্ষে গিয়ে তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন লেবার নেতা স্টারমার। ওই সাক্ষাতেই দুজনের বন্ধুত্বের সম্পর্ক একটি পোক্ত চেহারা পায়। পরে স্টারমারের বিবৃতিতেও এই সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়ার প্রত্যয় জানানো হয়।

ডেইলি মেইল লিখেছে, গত বছর জুলাই মাসে যুক্তরাজ্যের সাধারণ নির্বাচনেও আওয়ামী লীগের যুক্তরাজ্য শাখার কর্মীরা স্টারমারের ভোটের প্রচারে নামেন। স্টারমারের ডাউনিং স্ট্রিটের বাসিন্দা হওয়ার পেছনে সেটাও বড় ভূমিকা রাখে। সে সময় স্টারমারের জন্য পাঠানো অভিনন্দন বার্তায় শেখ হাসিনা তার দল আওয়ামী লীগের সঙ্গে ব্রিটিশ লেবার পার্টি এবং এর নেতাদের ‘বিশেষ বন্ধুত্বের’ কথা স্মরণ করেন। আর টিউলিপের খালা হলেন ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তবে এখন টিউলিপকে নিয়ে নানা চাপের মুখোমুখি হয়েছেন স্টারমার। তাকে পদে রাখা না রাখা নিয়ে কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে হবে স্টারমারকে। সম্পদ নিয়ে হয়তো এখন তদন্তের মুখোমুখি হতে হবে টিউলিপকে; তিনি কোথাও মিথ্যা বলেছেন কি না সেটাও দেখা হবে।

ডেইলি মেইল লিখেছে, কিয়ার স্টারমার যখন টিউলিপকে তার সরকারে প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব দিয়েছিলেন এবং টিউলিপের খালা শেখ হাসিনার ‘স্বৈরাচারী’ সরকারের সঙ্গে সদ্ভাব বজায় রেখে চলছিলেন, তখনো তিনি হয়তো ভাবছিলেন, কোনো অন্যায় টিউলিপ করেননি। কিন্তু সেই পরিস্থিতি এখন পাল্টে গেছে।

টিউলিপ সরে যেতে বাধ্য হলে তার উত্তরসূরি কে হবেন, প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের জ্যেষ্ঠ সহযোগীরা তা বিবেচনা করে দেখছেন বলে ইতিমধ্যে খবর এসেছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমে।

এখন প্রশ্ন হলো, কিয়ার স্টারমার কি রাজনীতিতে তার সবচেয়ে ভালো বন্ধুকে বরখাস্ত করার মতো কঠোর হতে পারবেন?

সর্বশেষ
logo
প্রকাশকঃ অধ্যাপক ড. জোবায়ের আলম
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকঃ তাপস রায় সরকার
মোবাইল: +৮৮০ ১৭৩৬ ৭৮৬৯১৫
কার্যালয় : বিটিটিসি বিল্ডিং (লেভেল:০৩), ২৭০/বি, তেজগাঁও (আই/এ), ঢাকা-১২০৮
মোবাইল: +880 2-8878026, +880 1736 786915, +880 1300 126 624
ইমেইল: tbtbangla@gmail.com (online), ads@thebangladeshtoday.com (adv) newsbangla@thebangladeshtoday.com (Print)
বাংলাদেশ টুডে কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি ও বিষয়বস্তু অন্য কোথাও প্রকাশ করা বে-আইনী।
Copyright © 2025 The Bangladesh Today. All Rights Reserved.
Host by
linkedin facebook pinterest youtube rss twitter instagram facebook-blank rss-blank linkedin-blank pinterest youtube twitter instagram