ঢাকা
৮ই জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
দুপুর ১২:১১
logo
প্রকাশিত : জানুয়ারি ১৩, ২০২৫

গ্রিনল্যান্ড কিনতে চান ট্রাম্প, খরচ হবে কত?

যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গ্রিনল্যান্ড কেনার বিষয়ে আবারও নতুন করে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। যার ফলে এই দ্বীপটিকে নিয়ে আলোচনার ঝড় উঠেছে আবার। সম্প্রতি ডেনমার্কের স্বায়ত্তশাসিত এই অঞ্চলটির মূল্য নির্ধারণ করেছেন মার্কিন অর্থনীতিবিদ ডেভিড বার্কার।

গ্রিনল্যান্ড কেনার বিষয়ে ট্রাম্পের আগ্রহ নতুন নয়। ২০১৯ সালেও তিনি এই প্রস্তাব দিয়েছিলেন। এমনকি এর আগেও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে গ্রিনল্যান্ড কেনার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। ১৯৪৬ সালে প্রেসিডেন্ট হ্যারি ট্রুম্যান ডেনমার্ককে ১০০ মিলিয়ন ডলার মূল্যের স্বর্ণ দিয়ে এই দ্বীপটি কেনার প্রস্তাব দিয়েছিলেন। তবে সেই প্রস্তাব ডেনমার্ক প্রত্যাখ্যান করে।

যদিও একটি সার্বভৌম দেশ থেকে আরেকটি দেশ কোনো অঞ্চল কিনে নেওয়ার ধারণা অস্বাভাবিক মনে হতে পারে, তবে ইতিহাসে এর উদাহরণ রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র এর আগে লুইজিয়ানা, আলাস্কা এবং ইউএস ভার্জিন আইল্যান্ডস কিনেছে।

ডেভিড বার্কারের মতে, যদি গ্রিনল্যান্ডকে মার্কিন প্রতিরক্ষার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে ধরা হয়, তবে এর মূল্য আরও বৃদ্ধি পাবে। রিয়েল এস্টেট ডেভেলপার এবং নিউ ইয়র্ক ফেডের সাবেক এই অর্থনীতিবিদের অভিমত, গ্রিনল্যান্ডের মূল্য হতে পারে ১২.৫ বিলিয়ন ডলার থেকে ৭৭ বিলিয়নের মধ্যে। এই হিসাব তিনি ইউএস ভার্জিন আইল্যান্ডস এবং আলাস্কার ক্রয়ের দামের ভিত্তিতে, মুদ্রাস্ফীতি এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি সমন্বয় করে নির্ধারণ করেছেন।

এর আগে ফিন্যান্সিয়াল টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, গ্রিনল্যান্ডের সম্পদের মূল্য $১.১ ট্রিলিয়ন হতে পারে। তবে বার্কার এই অনুমানকে অবাস্তব বলে মনে করেন। তিনি ব্যাখ্যা করেন, খনিজ সম্পদের পূর্ণ সুবিধা যুক্তরাষ্ট্র পাবে না, কারণ কোম্পানিগুলো ড্রিলিং এবং মাইনিংয়ের অধিকার কিনবে এবং তাদের নিজস্ব ব্যয় ও লাভ যোগ করবে।

গ্রিনল্যান্ড কেনা ট্রাম্পের জন্য সহজ কাজ হবে না। জাতীয় প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত উদ্বেগ থেকে তার এই আগ্রহ, তবে দ্বীপটির বাসিন্দারা যুক্তরাষ্ট্রের অংশ হতে আগ্রহী নাও হতে পারেন। গ্রিনল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী মিউট বোরুপ এগেডে স্পষ্ট জানিয়েছেন, "গ্রিনল্যান্ড বিক্রির জন্য নয় এবং কখনো বিক্রির জন্য থাকবে না।"

একটি দেশের মূল্য নির্ধারণ করা জটিল একটি বিষয়। সাধারণত জিডিপি ব্যবহৃত হয়, যা দেশের অর্থনৈতিক আউটপুট পরিমাপ করে। গ্রিনল্যান্ডের জিডিপি প্রায় $৩.২৩৬ বিলিয়ন। তবে এর প্রকৃত মূল্য এর ভবিষ্যৎ প্রবৃদ্ধি এবং অনাবিষ্কৃত সম্পদ, যেমন খনিজ এবং তেলের উপর নির্ভরশীল।

গ্রিনল্যান্ডের অন্যান্য মূল্য সংযোজনকারী বিষয়গুলোর মধ্যে রয়েছে জীবনযাত্রার মান, অবকাঠামো, এবং কৌশলগত অবস্থান। দ্বীপটির মূল্যবান কিন্তু অনাবিষ্কৃত সম্পদ আছে, যার প্রতিফলন এর জিডিপিতে হয় না।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র দীর্ঘদিন ধরে গ্রিনল্যান্ডে সামরিক উপস্থিতি বজায় রেখেছে। ন্যাটোর মিত্র হিসেবে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। সুইস থিংকের নিকোলা সুয়ানের মতে, ‘গ্রিনল্যান্ডের খনিজ সম্পদ, যেমন কপার এবং লিথিয়াম, যা প্রযুক্তি এবং বৈদ্যুতিক গাড়ির জন্য গুরুত্বপূর্ণ, এগুলো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একটি মূল কারণ হতে পারে।’

ডোনাল্ড ট্রাম্প সামরিক শক্তি ব্যবহারের সম্ভাবনা বা আলোচনায় শুল্ক আরোপের বিষয়ও উল্লেখ করেছেন। অন্যদিকে, ডেনমার্কের অর্থনীতি, যা যুক্তরাষ্ট্রে ওষুধ রপ্তানির মাধ্যমে বেড়েছে, এটিকে একটি আলোচনার হাতিয়ার হিসেবে তুলে ধরেছে।

যদিও পানামা খালের মতো জাতীয় সম্পদ কেনা তুলনামূলক সহজ, তবে আজকের বিশ্বে ভূমি বা অঞ্চল কেনা বেশ বিরল। জাতীয় গর্ব, গণতন্ত্র এবং আন্তর্জাতিক মানদণ্ড এমন লেনদেনকে অসম্ভব করে তুলেছে। গ্রিনল্যান্ডের একটি মূল্য থাকতে পারে, তবে বর্তমান পরিস্থিতিতে এই চুক্তি সম্পন্ন করা অত্যন্ত কঠিন। ডেভিড বার্কারের মতে, ‘গ্রিনল্যান্ড কেনা শতাব্দীর সেরা চুক্তি হবে।’

সর্বশেষ
logo
প্রকাশকঃ অধ্যাপক ড. জোবায়ের আলম
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকঃ তাপস রায় সরকার
মোবাইল: +৮৮০ ১৭৩৬ ৭৮৬৯১৫
কার্যালয় : বিটিটিসি বিল্ডিং (লেভেল:০৩), ২৭০/বি, তেজগাঁও (আই/এ), ঢাকা-১২০৮
মোবাইল: +880 2-8878026, +880 1736 786915, +880 1300 126 624
ইমেইল: tbtbangla@gmail.com (online), ads@thebangladeshtoday.com (adv) newsbangla@thebangladeshtoday.com (Print)
বাংলাদেশ টুডে কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি ও বিষয়বস্তু অন্য কোথাও প্রকাশ করা বে-আইনী।
Copyright © 2025 The Bangladesh Today. All Rights Reserved.
Host by
linkedin facebook pinterest youtube rss twitter instagram facebook-blank rss-blank linkedin-blank pinterest youtube twitter instagram