ঢাকা
১৯শে ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
রাত ১২:১৬
logo
প্রকাশিত : ডিসেম্বর ১৮, ২০২৫

নদীর পানি ও মাছের দেহে মাইক্রোপ্লাস্টিক

হবিগঞ্জ প্রতিনিধি: হবিগঞ্জ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিল্পদূষণ, নদ-নদীর অবস্থা এবং পরিবেশগত ঝুঁকি নিয়ে সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে এই সেমিনারের আয়োজন করা হয়। সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- হবিগঞ্জ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. সৈয়দ সায়েম উদ্দিন আহম্মদ।

বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- ধরিত্রী রক্ষায় আমরা (ধরা) হবিগঞ্জ-এর উপদেষ্টা পরিষদের সভাপতি অধ্যাপক মো. ইকরামুল ওয়াদুদ। সম্মানিত অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ধরিত্রী রক্ষায় আমরা (ধরা)-এর সদস্য সচিব ও ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশ-এর সমন্বয়ক শরীফ জামিল। এছাড়াও শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের এনিম্যাল সায়েন্স অ্যান্ড ভেটেরিনারি মেডিসিন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. জাহাঙ্গীর আলমসহ হবিগঞ্জ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

সেমিনারের মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন হবিগঞ্জ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক মো. শাকির আহম্মদ। তিনি সুতাং নদীর পানি ও মাছের দেহে মাইক্রোপ্লাস্টিক দূষণ নিয়ে পরিচালিত গবেষণার ফলাফল তুলে ধরেন। গবেষণায় দেখা যায়, সুতাং নদীর পানিতে প্রতি লিটারে ৬.৬৭ থেকে ৪৬.৬টি পর্যন্ত মাইক্রোপ্লাস্টিক কণা পাওয়া গেছে। পানিতে থাকা মাইক্রোপ্লাস্টিকের মধ্যে খন্ডাংশ ও ফাইবারের আধিক্য বেশি এবং এগুলোর আকার মূলত ০.১ থেকে ০.৫ মিলিমিটারের মধ্যে।

গবেষণায় আরও উল্লেখ করা হয়, সুতাং নদীর ৩০টি মাছের পরিপাকতন্ত্রে মোট ৫১টি প্লাস্টিক কণা শনাক্ত করা হয়েছে, যা গড়ে প্রতিটি মাছে প্রায় ১.৭টি করে মাইক্রোপ্লাস্টিক উপস্থিতির ইঙ্গিত দেয়। বড় আকারের মাছ তুলনামূলকভাবে বেশি মাইক্রোপ্লাস্টিক গ্রহণ করে, যা খাদ্যগ্রহণের পরিমাণ ও দীর্ঘ সময় ধরে দূষিত পরিবেশে থাকার সঙ্গে সম্পর্কিত বলে গবেষণায় উঠে এসেছে। বিশ্লেষণে পলিথিন, পলিইথিলিন টেরেফথালেট, পলিআমাইড এবং সেলুলোজ অ্যাসিটেট ধরনের প্লাস্টিকের উপস্থিতি পাওয়া যায়, যা মূলত প্লাস্টিক প্যাকেজিং ও বস্ত্রশিল্প থেকে সৃষ্ট দূষণের ইঙ্গিত দেয়।

অন্যদিকে, খোয়াই রিভার ওয়াটারকিপার তোফাজ্জল সোহেল হবিগঞ্জ অঞ্চলের পরিবেশ দূষণ নিয়ে একটি প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। তিনি নদী দখল, শিল্পবর্জ্য নিঃসরণ এবং অপরিকল্পিত নগরায়নের ফলে হবিগঞ্জের নদ-নদী ও পরিবেশ মারাত্মক ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে বলে মন্তব্য করেন।

সেমিনারে বক্তারা বলেন, নদী ও জলজ পরিবেশে মাইক্রোপ্লাস্টিক দূষণ ভবিষ্যতে মানবস্বাস্থ্য ও জীববৈচিত্র্যের জন্য গুরুতর হুমকি হয়ে উঠতে পারে। এ ধরনের গবেষণা দেশের মিঠাপানির পরিবেশে মাইক্রোপ্লাস্টিক দূষণের মাত্রা নির্ধারণে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভিত্তি হিসেবে কাজ করবে বলে তারা আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

সম্মানিত অতিথির বক্তব্যে শরীফ জামিল বলেন, হবিগঞ্জের শিল্পদূষণ বহু আগেই মানবিক বিপর্যয়ে রূপ নিয়েছে। শুধু সুতাং নদী নয় সোনাই বলভদ্র, খড়কির খাল, রাজখাল ও শৈলজোড়া খালসহ এ অঞ্চলের সমস্ত বর্জ্য মেঘনা নদীতে গিয়ে পড়ছে। বিস্তীর্ণ কৃষি জমি ও বহু সংখ্যক গ্রামে শিল্পবর্জ্য দূষণ ছড়িয়ে পড়েছে। বিভিন্ন সময়ে এই শিল্পদূষণ নিয়ন্ত্রণে নানা উদ্যোগ থাকলেও বাস্তবে অবস্থা শুধুই অবনতি ঘটেছে। হবিগঞ্জ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের এ গবেষণা একটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ। যা নীতি নির্ধারকদের কঠোরভাবে শিল্পদূষণ নিয়ন্ত্রণে এবং হবিগঞ্জের নদ-নদী পুনরুদ্ধারে সচেষ্ট করবে।

সর্বশেষ
logo
প্রকাশকঃ অধ্যাপক ড. জোবায়ের আলম
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকঃ এডভোকেট মো: গোলাম সরোয়ার
কার্যালয় : বিটিটিসি বিল্ডিং (লেভেল:০৩), ২৭০/বি, তেজগাঁও (আই/এ), ঢাকা-১২০৮
মোবাইল: +880 2-8878026, +880 1736 786915, +880 1300 126 624
ইমেইল: tbtbangla@gmail.com (online), ads@thebangladeshtoday.com (adv) newsbangla@thebangladeshtoday.com (Print)
বাংলাদেশ টুডে কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি ও বিষয়বস্তু অন্য কোথাও প্রকাশ করা বে-আইনী।
Copyright © 2025 The Bangladesh Today. All Rights Reserved.
Host by
linkedin facebook pinterest youtube rss twitter instagram facebook-blank rss-blank linkedin-blank pinterest youtube twitter instagram