ঢাকা
৪ঠা মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
বিকাল ৩:৩৩
logo
প্রকাশিত : মে ৪, ২০২৫

বজ্রপাত নিয়ন্ত্রণকারী ড্রোন আবিষ্কার করেছেন বিজ্ঞানীরা

বজ্রপাত একটি বড় প্রাকৃতিক দুর্যোগ। যার ফলে প্রাণহানি ও সম্পদের উল্লেখযোগ্য ক্ষতি হয়। সবথেকে বড় কথা হলো এটি নিয়ন্ত্রণ করা অত্যন্ত কঠিন। কারণ কোথায়, কখন বজ্রপাত ঘটবে তার পূর্বাভাস পাওয়া প্রায় অসম্ভব। তবে, টোকিও-ভিত্তিক একটি প্রযুক্তি জায়ান্ট দাবি করেছে যে, তারা বিশ্বে প্রথম এমন একটি ড্রোন তৈরি করেছে যা মেঘে প্রবেশ করে বজ্রপাত নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম।

কোম্পানির দাবি, ড্রোনটি বজ্রপাতের মতো মেঘের নিচ থেকে বিদ্যুতের ঝলক সৃষ্টি করতে পারে, সামান্য ক্ষতি না করেও বজ্রপাতের অবিশ্বাস্য শক্তি শোষণ করতে পারে এবং পুরোটাই ঘটে আকাশের বুকে। যদিও এই দাবিগুলো নিয়ে পিয়ার-রিভিউ করা হয়নি, তবে নিপ্পন টেলিগ্রাফ অ্যান্ড টেলিফোন (এনটিটি) গ্রুপের দাবিমতো যদি ড্রোনটি কাজ করে, তাহলে প্রযুক্তিটি তাত্ত্বিকভাবে বিশ্বজুড়ে শহর এবং অবকাঠামোকে বজ্রপাতের ক্ষতি থেকে রক্ষা করতে পারে।

প্রতি মিনিটে, বিশ্বজুড়ে প্রায় ৬,০০০ বজ্রপাত মাটিতে আঘাত করে। একটি মাত্র বজ্রপাতের শক্তি বনে আগুন ধরিয়ে দিতে পারে, কংক্রিটের দেওয়াল ভেঙে দিতে পারে, বিদ্যুৎ সরবরাহে ব্যাঘাত ঘটাতে পারে, বৈদ্যুতিক তার গলিয়ে দিতে পারে। ইলেকট্রনিক সিস্টেম এবং ডিভাইসগুলোকে নষ্ট করে দিতে পারে। উঁচু ভবনগুলোতে বজ্রপাত নিরোধক রড লাগানো হয়। এটি কিছুটা সুরক্ষা প্রদান করলেও এনটিটি গ্রুপ বজ্রপাতকে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য বছরের পর বছর ধরে কাজ করে আসছে।

তাদের ড্রোনটি দেখতে খুব একটা ভালো নাও লাগতে পারে, কিন্তু কোম্পানির দাবি- গত শীতে উত্তর গোলার্ধে বজ্রপাতের মেঘের নিচে ড্রোনটি নিয়ে গিয়ে পরীক্ষা করা হয়েছে। ১৩ ডিসেম্বর, ২০২৪ তারিখে জাপানের শিমানে একটি পাহাড়ি এলাকার কাছে যখন একটি ঝড় আসে, তখন এনটিটির তৈরি ড্রোনটি ৩০০ মিটার (৯৮৪ ফুট) উচ্চতায় উড়ে যায়, যার সাথে একটি পরিবাহী তার ছিল।

এই তারটি ড্রোনটিকে মাটিতে থাকা একটি সুইচের সাথে সংযুক্ত করেছিল। এর মাধ্যমে ড্রোনটি বৈদ্যুতিকভাবে গ্রাউন্ডেড হত। এনটিটি গ্রুপের মতে, ড্রোনটি বজ্রপাতের মধ্যেও তার কাজ চালিয়ে গেছে এবং উড়তে পেরেছে। যদিও এর প্রতিরক্ষামূলক আবরণ কিছুটা গলে গেছে।

এটিই প্রথমবার নয় যে, বিজ্ঞানীরা আকাশ থেকে বৈদ্যুতিক বোল্টকে ট্রিগার এবং আকর্ষণ করার জন্য বজ্রপাত নিরোধক রড ছাড়া অন্য কিছু ব্যবহার করেছেন।

সম্প্রতি, কয়েকজন বিজ্ঞানী আবিষ্কার করেছেন যে, আকাশে লেজার নিক্ষেপ করলে তারা গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো থেকে বজ্রপাতকে দূরে সরিয়ে দিতে পারে। এই লেজার 'ডিকয়' প্রথম প্রস্তাবিত হয়েছিল ১৯৭৪ সালে এবং এটি কার্যকর করতে কয়েক দশক ধরে পরীক্ষা নিরীক্ষা চলে। বেশ কয়েকটি প্রচেষ্টা ব্যর্থও হয়েছে। তবে লেজারের বিপরীতে যদি ড্রোন ব্যবহার করা হয় তাকে বজ্রপাতকে শোষণ করে বৈদ্যুতিক ক্ষতি থেকে রক্ষা করতে হবে। এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে এনটিটি গ্রুপটি তার ডিভাইসটিকে একটি ধাতব খাঁচায় আবদ্ধ করে যা ডিভাইসের চারপাশে বিদ্যুৎ পরিচালনা করে ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক হস্তক্ষেপ হ্রাস করে।

ল্যাব পরীক্ষায় ড্রোনটি বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এই খাঁচা দ্বারা সুরক্ষিত ছিল। এমনকি যখন এনটিটি-এর বিজ্ঞানীরা বলেছিলেন যে, তারা এটিকে কৃত্রিম বজ্রপাত দিয়ে আঘাত করেছিলেন সেটি প্রাকৃতিক বজ্রপাতের চেয়ে পাঁচ গুণ বেশি শক্তিশালী ছিল।

ড্রোন প্রযুক্তি সম্পর্কে কোম্পানির সাম্প্রতিক এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, এনটিটি ড্রোন উড়িয়ে শহর ও জনগণকে বজ্রপাতের ক্ষতি থেকে রক্ষা করার লক্ষ্যে কাজ করছে। গ্রীষ্মমন্ডলীয় অঞ্চলের দেশগুলোতে বিশ্বের অন্যান্য অঞ্চলের তুলনায় বজ্রপাতের ঘটনা বেশি ঘটে, তবে সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে যে, দূষণ এবং জলবায়ু পরিবর্তন আগামী বছরগুলোতে বজ্রপাতের ঝুঁকি বাড়িয়ে তুলতে পারে। বজ্রপাতের ক্ষয়ক্ষতি কমাতে নতুন প্রযুক্তিকে স্বাগত জানানোর পাশাপাশি এনটিটি গ্রুপ আরও এক ধাপ এগিয়ে বলেছে যে, তারা তাদের ড্রোনের মাধ্যমে মাটিতে নির্দেশিত বজ্রপাতের শক্তি ব্যবহারের উপায়গুলোও অন্বেষণ করছে।

সূত্র : সায়েন্স এলার্ট

logo
প্রকাশকঃ অধ্যাপক ড. জোবায়ের আলম
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকঃ তাপস রায় সরকার
মোবাইল: +৮৮০ ১৭৩৬ ৭৮৬৯১৫
কার্যালয় : বিটিটিসি বিল্ডিং (লেভেল:০৩), ২৭০/বি, তেজগাঁও (আই/এ), ঢাকা-১২০৮
মোবাইল: +880 2-8878026, +880 1736 786915, +880 1300 126 624
ইমেইল: tbtbangla@gmail.com (online), ads@thebangladeshtoday.com (adv) newsbangla@thebangladeshtoday.com (Print)
বাংলাদেশ টুডে কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি ও বিষয়বস্তু অন্য কোথাও প্রকাশ করা বে-আইনী।
Copyright © 2025 The Bangladesh Today. All Rights Reserved.
Host by
linkedin facebook pinterest youtube rss twitter instagram facebook-blank rss-blank linkedin-blank pinterest youtube twitter instagram