

একে মিলন, সুনামগঞ্জ থেকে : সুনামগঞ্জ সদর উপজেলা সুরমা নদীর ভাঙ্গনে হরিনাপাটি গ্রামটি ক্রমেই বিলীন হয়ে যাচ্ছে। গ্রামের ঐতিহ্য এবং পূর্বের চিত্র একেবারেই পাল্টে গেছে। ফুটবল খেলার মাঠ সহ আবাদি জমি এবং অসংখ্য ঘরবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। ঘরবাড়ি হারিয়ে এখনও খোলা আকাশের নীচে বসবাস করছে অনেক পরিবার। বাড়ি ঘর হারিয়ে মাথাগুজার ঠাই পাচ্ছেনা কেউ কেউ। গ্রামজুড়ে এক নীরব তান্ডভ বিরাজ করছে। ভাঙ্গন আতঙ্কে গ্রামবাসীর রাতের ঘুম হারাম হয়ে যাচ্ছে। ধনী গরীব নির্বিশেষে সবার ঘর দুয়ার নদীগর্ভে বিলীন হচ্ছে।
এ ব্যপারে গ্রামবাসী বার বার প্রশাসনের দ্বারস্থ হচ্ছেন। আবেদন নিবেদন ও একাধিক মানববন্ধন করে ভাঙ্গন প্রতিরোধের আশায় আশায় তীর্থের কাকের মতো পথপানে চেয়ে আছেন। কবে সুদিন আসবে আর প্রশাসনের উদ্যোগে ভাঙ্গন প্রতিরোধে স্থায়ী পদক্ষেপ নেয়া হবে।
এরই ধারাবাহিকতায় ভাঙ্গন রোধে ৭ম বারের মতো মানববন্ধন করেছেন সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার ২নং রঙ্গারচর ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের হরিনাপাটি গ্রামবাসী। শুক্রবার ২৪ অক্টোবর বাদজুম্মা সুরমানদীর তীরে বিশাল এক মানববন্ধনে আওয়াজ তুলেন গ্রামবাসী।
সাবেক ইউপি সদস্য মো. আব্দুল খালিকের সভাপতিত্বে এবং বিশিষ্ট সমাজসেবী ফাহিমের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন আলহাজ্ব আছদ্দর আলী, বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আব্দুল খালিক, মো. আযর আলী, মো.আহাদ আলী, শাবাজ মিয়া প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, বিগত বছরগুলোতে ধারাবাহিকভাবে আমরা স্থানীয় প্রশাসন বিশেষ করে জেলা প্রশাসক, পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলীসহ পাউবো’র মহাপরিচালক ঢাকা বরাবর আবেদন নিবেদন করে আসছি এবং মানববন্ধন করছি। আমাদের সাথে আশপাশ এলাকার যারা আবেদন নিবেদন করেছে তাদের নদী ভাঙ্গন রোধে স্থায়ী পদক্ষেপ নিয়েছে সংশ্লিষ্ট প্রশাসন । কিন্তু বাদ পড়েছি আমরা। আমাদের নদী ভাঙ্গন শুধুমাত্র কিছু সংখ্যক জিও ব্যাগ ভাংগনের আংশিক এলাকায় ফেলা হয়েছে এর বেশি কিছু হয়নি। এতে আমরা হতাশ। আমরা সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের কাছে দাবি করছি,আমাদের ঐতিহ্যবাহী গ্রামের প্রাচীণতম নির্দশন,আমাদের বাপদাদা আমলের বড় মসজিদ,প্রাইমারী স্কুল, মক্তব,বাজার, এলজিইডি সড়ক এখন হুমকিরমুখে পড়েছে। নদী ভাঙ্গন অব্যাহত আছে। যেকোন সময় নদী ঘিলে খেতে পারে এসব স্থাপনা। সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের কাছে আমাদের প্রাণের দাবি জরুরি ভিত্তিতে সরেজমিন সার্ভে করে ভাঙ্গন রোধে স্থায়ী ব্যবস্থা নেয়া হোক।

