

ঘোড়াঘাট (দিনাজপুর) প্রতিনিধি: দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলা সদর ওসমানপুরে ফুটপাত ও ড্রেন দখলমুক্ত না হওয়ায় জনদুর্ভোগ চরমে উঠেছে। চলতি বছরের জানুয়ারিতে বিষয়টি নিয়ে সংবাদ প্রকাশ হলেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোন কার্যকর পদক্ষেপ না নেয়ায় এখন অবস্থা আরও ভয়াবহ রূপ নিয়েছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আশপাশের মূল ড্রেনগুলো মাটি ভরাট করে তার ওপর নতুন দোকানঘর নির্মাণ করা হয়েছে। এতে হাসপাতাল এলাকায় পানি নিষ্কাশনের পথ বন্ধ হয়ে পড়েছে। সামান্য বৃষ্টিতেই সৃষ্টি হয় জলাবদ্ধতা, দুর্গন্ধে নাকাল হচ্ছে রোগী ও স্বজনেরা।
স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তার সুযোগে বাজার ও হাসপাতাল এলাকার ফুটপাত ও ড্রেনের ওপরে নতুন দোকান তুলছে দখলকারীরা। বিগত সময়ে নামমাত্র উচ্ছেদ অভিযান চালানো হলেও কিছুদিন পর আবার আগের অবস্থায় ফিরে আসে সব। কেউ কেউ আবার প্রভাবশালী মহলের ছত্রছায়ায় একরকম স্থায়ী দোকান বানিয়ে ফেলেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক স্থানীয় বাসিন্দারা ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান, আমরা প্রথমে ভেবেছিলাম প্রশাসন ব্যবস্থা নেবে, কিন্তু এখন দেখছি উল্টো ড্রেনের ওপরই দোকান বানানো হচ্ছে। এই জনদুর্ভোগের কথা ইউএনও আর এসিল্যান্ডকে বহুবার বলা হয়েছে, পত্র-পত্রিকায়ও খবর ছাপা হয়েছে, কিন্তু কোন কাজ হয় না। বরং এখন ড্রেনই বন্ধ করে দিয়েছে নতুন দোকানগুলো। সরকারি খাসজমি ও ফুটপাত দখলমুক্ত রাখার দায়িত্ব প্রশাসনের হলেও বছরের পর বছর ধরে এসব জায়গা দখল হয়ে যাচ্ছে- আর তারা শুধু চেয়ে চেয়ে দেখছে।
সচেতন মহলের প্রশ্ন, “প্রশাসন কি কেবল দেখেই যাবে? জনগণের দুর্ভোগের শেষ কোথায়?” তাদের দাবি, ঘোড়াঘাট উপজেলা প্রশাসনের উচিত দ্রুত অভিযান চালিয়ে হাসপাতাল এলাকার দখলকৃত ড্রেন ও পথঘাট মুক্ত করা, যাতে জনস্বার্থ রক্ষা পায় এবং ভবিষ্যতে এ ধরনের অব্যবস্থাপনা বন্ধ হয়।
এ বিষয়ে কথা হলে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সোলাইমান মেহেদী হাসান জানান, আমাদের হাসপাতালে যে ড্রেনটি ছিল সেটা মাটি ভরাট করে লোকজন অবৈধভাবে দোকানপাট নির্মাণ করায় আমাদের দেয়াল গুলো নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। অল্প বৃষ্টিতেই হাসপাতালে ভেতর বাহির জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হচ্ছে। বাজার বসার কারণে জরুরী রোগীগুলো বিশেষ করে ডেলিভারি রোগী ও এক্সিডেন্ট এর রোগী হাসপাতালে ঢুকতে বেশ সমস্যা হচ্ছে যেটা চিকিৎসার জন্য বড় বাধা হয়ে দাড়াচ্ছে। এ বিষয়ে উর্ধ্বতন কতৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে এবং উপজেলার মাসিক মিটিং- এ বেশ কয়েকবার বলার পরও কার্যকর কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি। এ বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করার জন্য কতৃপক্ষের নিকট আবারও জোর দাবি জানাচ্ছি।
এ ব্যাপারে ঘোড়াঘাট পৌর প্রশাসক ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) আব্দুল আল মামুন কাওসার শেখ এর সাথে কথা হলে তিনি জানান, হাসপাতালের ড্রেন দখল করে যারা অবৈধভাবে দোকানপাট করে আছে তাদেরকে দুইবার নোটিশ করা হয়েছে কিন্তু তারা এ বিষয়ে কোন গ্রাহ্য করছে না। আমাদের পক্ষ থেকে অনেক টাকা খরচ করে হাটের ভেতরে একটি শেড তৈরি করে দেওয়া হয়েছে তারপরও তারা এই রাস্তার পাশে দোকানগুলো ছাড়ছে না। এ রাস্তায় চলাচল করতে আমাদেরও অনেক বেগ পেতে হয়। এ বিষয়ে ইউএনও স্যারের সাথে কথা হয়েছে আমরা খুব দ্রুতই পদক্ষেপ গ্রহণ করবো।

