নওগাঁর ধামইরহাট থানায় রাখা ট্রাংকে এইচএসসির ইতিহাস দ্বিতীয় পত্রের প্রশ্নপত্র ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকার ঘটনায় ব্যাপক তোলপাড় শুরু হয়েছে। এ ঘটনায় দায়িত্বে অবহেলায় থানার এক উপ-পরিদর্শক ও এক পুলিশ সদস্যকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৭ জুন) রাতে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) সাদিয়া আফরিনকে প্রধান করে গত বৃহস্পতিবার তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে দিয়েছেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আউয়াল তদন্ত কমিটির অপর দুই সদস্য হলেন, অতিরিক্ত পুলিশ সার্কেল ও জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা শাহাদাৎ হোসেন।
জানা গেছে, ধামইরহাট থানা হেফাজতে ২০২৫ সালের এইচএসসি পরীক্ষার জন্য প্রশ্নপত্র রাখা হয়েছে একটি সিলগালা করা ট্রাংকের মধ্যে। যার দুইটি তালা উধাও। এতে রাখা রাজশাহী বোর্ডের ইতিহাস দ্বিতীয় পত্র সেট কোড নম্বর ৩০৫-এর ৫০টি প্রশ্নপত্র ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে থাকে। এর মধ্যে ১৫টি ছেড়া অবস্থায় এবং ৩৫টি প্রশ্নপত্র ভালো অবস্থায় পাওয়া গেছে। তবে কোনো প্রশ্নপত্র খোয়া যায়নি।
এ ঘটনায় থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল মালেকের সেল ফোনে একাধিকবার ফোন দিয়ে সাড়া না পাওয়ায় কোন তথ্য পাওয়া যায়নি।
নওগাঁর পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাফিউল সারোয়ার জানান, গত ২৪ এপ্রিল রাতে উপজেলার বড়থা বাজারে দুর্বৃত্তের হামলায় উজ্জল হোসেন নামে এক ছাগল ব্যবসায়ী নিহত হন। এই মামলার আসামি বংশিবাটি এলাকার সাগর হোসেনকে আটক করে মঙ্গলবার রাতে থানায় আনা হয়। পরে তাকে থানা হেফাজতে রাখলে হাতে হাতকড়া থাকা সত্ত্বেও তিনি সে ট্রাংকে থাকা প্রশ্নপত্রগুলো বের করেন।
এক প্রশ্নের জবাবে পুলিশ সুপার আরও বলেন, ট্রাংকের তালার সঙ্গে চাবি রেখে দিয়েছেন দায়িত্বপ্রাপ্ত উপ-পরিদর্শক। ফলে ওই আসামি এমনটি করে থাকতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হয়েছে। এই ঘটনায় দায়িত্বে অবেহেলায় ওই উপ-পরিদর্শক ও এক পুলিশ সদস্যকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। তাছাড়া ওই আসামির বিরুদ্ধেও মামলা দায়ের করা হয়েছে। ঘটনাটি গুরুত্বসহকারে ক্ষতিয়ে দেখা হচ্ছে।
উপজেলা ধামইরহাট সরকারি এমএম ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর জাহাঙ্গীর আলম জানান, কোনো প্রশ্নপত্র খোয়া যায়নি। তবে এ বিষয়ে তদন্ত চলমান রয়েছে। তদন্তের প্রতিবেদন হাতে পেলেই বিস্তারিত জানা সম্ভব হবে।
এ বিষয়ে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. শাহাদাৎ হোসেন বলেন, যত দ্রুত সম্ভব তদন্ত করে জেলা প্রশাসককে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়া হবে।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) সাদিয়া আফরিন জানান, তদন্ত প্রতিবেন জমা দেওয়ার যদিও নির্দিষ্ট কোনো তারিখ দেওয়া হয়নি। যত দ্রুত সম্ভব তদন্ত প্রতিবেন জমা দেওয়া হবে।