কাজিপুর (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি: সিরাজগঞ্জের কাজিপুরে ইছামতি নদীর উপর নির্মিত একটি সেতুর দুই পাশের রেলিং ভেঙে পড়ায় চলাচলে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ছে। যেকোন সময় পুরো কাঠামোটি ধসে যাবার শঙ্কা নিয়ে বাধ্য হয়ে এই সেতু ব্যবহার করে যাতায়াত করছে কয়েক গ্রামের মানুষ।
উত্তর এবং দক্ষিণ পাইকপাড়ার মাঝে ইছামতি নদী পেরিয়ে সংযোগ স্থাপনের জন্যে নির্মিত এই সেতুটি স্থানীয়ভাবে পাইকপাড়া সেতু নামে পরিচিত। স্থানীয়ভাবে চরপাড়া সেতু নামে পরিচিত এই সেতুটি মাত্র আট ফুট প্রশ্বস্ত। একটা ভ্যানগাড়ি উঠলে পুরো সেতু দিয়ে আরেকটি ভ্যানগাড়ি বা বোঝা মাথায় পার হওয়া যায়না। দুর্ঘটনা এড়াতে এবং কৃষিপণ্য নিয়ে নির্বিঘ্নে পারাপার হতে স্থানীয় লোকজন গ্রামীণ জনপদের এই সেতুটি দ্রুত সংস্কার অথবা নতুন করে নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন।
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার সোনামুখী ইউনিয়নের পাঁচগাছি এলাকার কৃষ্ণগোবিন্দপুর চরপাড়া ত্রিশক্তি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশেই সেতুটির অবস্থান। দুই যুগ পূর্বে শুধুমাত্র সাধারণ জনগণের পায়ে হেঁটে পারাপারের কথা চিন্তা করে এই সেতুটি নির্মাণ করা হয়। নির্মাণের সময় সেতুর দুই পাশে রেলিং ছিল। কিন্তু গত সাত-আট বছর যাবৎ একটু একটু করে সেতুর দুই পাশের রেলিং খসে পড়তে শুরু করে। এখন সেতুটি অনেকটাই জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় অনেক লোকজনই জানিয়েছেন নির্মাণে নিম্নমাণের সামগ্রী ব্যবহারের ফলে সেতুটির এমন বেহাল দশা হয়েছে। এদিকে সেতু নির্মাণের দীর্ঘদিন পেরিয়ে গেলেও এর দুপাশের সড়ক এখনো পাকাকরণ করা হয়নি।
স্থানীয়রা জানান, পাঁচগাছি, পাইকপাড়া, চরকাদহ সহ আশপাশের প্রায় পাঁচটি গ্রামের মানুষ সেতুটি ব্যবহার করেন। এলাকাটি কৃষি পণ্য উৎপাদনে প্রসিদ্ধ। অনেকটা ঝুঁকি নিয়ে ওই সেতু দিয়ে প্রতিদিন কয়েকশ মণ কৃষিপণ্য পারাপার করেন কয়েক গ্রামের কৃষকেরা।
উত্তর পাইকপাড়া গ্রামের রফিকুল মিয়া জানান, সেতুটি নির্মাণের কয়েক বছরের মধ্যেই রেলিং এর পলেস্তারা চটে যেতে থাকে। এই সুযোগে নেশাখোর কিছু পোলাপান রাতে এসে চুপিসারে রড কেটে নিয়ে বিক্রি করছে। দিনের বেলায় চলাচল করা গেলেও এই সেতু দিয়ে রাতে অন্ধকারে চলাচল খুবই ঝুঁকিপূর্ণ।
দক্ষিণ পাইকপাড়ার কৃষক রফি মন্ডল বলেন, নদীর ওপারের কৃষিপণ্য ট্রলি অথবা ভ্যানে করে আনতে হয়। একেতো সরু সেতু, তার ওপর রেলিং ভাঙা ফলে যে কোন সময় মারাত্মক দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
হৃদয় মিয়া নামের একজন কলেজছাত্র জানান, জরাজীর্ণ জানার পরেও বাধ্য হয়ে প্রতিদিন ঝুঁকি নিয়ে মোটরসাইকেল, বাইসাইকেল, অটোরিকশা, ভ্যান ও হেঁটে আমরা চলাচল করছি। বেশি ঝুঁকিতে শিশু ও বয়স্করা।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) কাজিপুর উপজেলা প্রকৌশলী একেএম হেদায়েত উল্ল্যাহ বলেন, সড়কটি এলজিইডির গেজেটভূক্ত নয়। ফলে সেতুটি সংস্কারের জন্যে গেজেটভূক্তির প্রস্তাবনা পাঠানো হবে। তারপর ওই রাস্তার পাকাকরণের কাজ হাত দেয়া হবে। তবে জনগুরুত্বপূর্ণ বিবেচনায় সেতুটির সংস্কার অন্যভাবে করা যায় কিনা দেখছি।