গৌরীপুর (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি: ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলায় লাইসেন্স ছাড়াই প্রায় ১৭টি ইটভাটা চলছে। একটি ইটভাটাও নেই পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র। তবুও সরকারি বিভিন্ন সংস্থা ও পরিবেশ অধিদপ্তরকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে চলছে এসব ইটভাটা। ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন (নিয়ন্ত্রণ) আইন ২০১৩ এর ৮ধারায় বলা আছে-কৃষি জমি, আবাসিক এলাকা, সরকারি বা ব্যক্তিগত বন, অভয়ারণ্য, বাগান, জলাভূমিতে ইটভাটা স্থাপন করা যাবে না। আবার ৮(২) ধারায় বলা আছে- নিষিদ্ধ এলাকার সীমানার মধ্যে ইটভাটা স্থাপনের জন্য পরিবেশ অধিদপ্তর বা অন্য কোনো কর্তৃপক্ষ অনুমতি বা ছাড়পত্র কিংবা লাইসেন্স প্রদান করতে পারবে না। আবাসিক, ফলের বাগান, ত্রিফসলী জমিতে স্থাপন হচ্ছে ইটভাটা। এসকল ধারা এখানে অধরা।
ইটভাটা স্থাপন নিয়ন্ত্রণ আইন অনুযায়ী ৫০টি বৃক্ষ বা ৫০টি পরিবার বসবাস করে এমন এলাকা থেকে ৩কিলোমিটারের মধ্যে ইটভাটা স্থাপন নিষিদ্ধ। কিন্তু ইটভাটার কিলোমিটারের মধ্যে রয়েছে লাখো ফলজ, বনজ, ঔষধি বৃক্ষারাজির সবুজ অরণ্য। দুটি প্রাথমিক বিদ্যালয় ঘেষেও রয়েছে ইটভাটা। পরিবেশ অধিদপ্তর, কৃষি বিভাগ ও বন বিভাগ আইন বাস্তবায়নে উদাসীন। এসব অনিয়ম সরকারি দপ্তরগুলোর নজরে আসছেনা।
পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিদর্শক মো. রুকন মিয়াকে নিয়ে ছয়টি অবৈধ ইটভাটায় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সুনন্দা সরকার প্রমা। অভিযানে ভ্রাম্যমাণ আদালত ১৪ লাখ টাকা জরিমানার পরও ইটভাটার কার্যক্রম বন্ধ হয়নি। বহাল তবিয়তে চলছে কার্যক্রম। ভ্রাম্যমাণ আদালত ইট প্রস্তুত ও ভাটা নিয়ন্ত্রণ আইন ২০১৩ সংশোধিত ২০১৯ এর ৫(২) ভঙ্গের অপরাধে ১৫(১) ধারায় ১৪লাখ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়।
স্থানীয়রা জানায়, এই ধরণের অভিযান ও জরিমানা প্রায়ই দেখা যায়, কাজের কাজ কিছুই হয় না। ভাটার প্রভাবশালী মালিকরা বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে ইটভাটার কাজকর্ম চালিয়ে যান।
সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সুনন্দা সরকার প্রমা ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে জরিমানার বিষয়টি নিশ্চিত করে সাংবাদিকদের বলেন, তিনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নির্দেশে এই জরিমানা করেছেন। পরিবেশ রক্ষায় এই ধরণের অভিযান অব্যাহত থাকবে।
ময়মনসিংহ পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিদর্শক মো. রোকন মিয়া সাংবাদিকদের বলেন, আমি তো প্রসিকিউশন দিয়ে আসছি। আদালত ব্যবস্থা নিবে।
গৌরীপুর উপলোর নির্বাহী কর্মকর্তা এম সাজ্জাতুল হাসান সাংবাদিকদের বলেন, জরিমানার পরও ইটভাটা কেন চলবে এ বিষয়ে সহকারী কমিশনার ভূমির কাছে জানতে চাওয়া হবে।
ময়মনসিংহ পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক মো. মেজবাবুল আলম বলেন, পরিবেশ রক্ষায় আমার প্রসিকিউশন দিয়ে থাকি। জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে থাকে। ইটভাটা চলবে কি বন্ধ হবে তা বিচারক নির্ধারণ করবেন। আমাদের অভিযান অব্যাহত থাকবে।