মাহমুদুল হাসান মনি, সাটুরিয়া (মানিকগঞ্জ) প্রতিনিধি: মানিকগঞ্জের সাটুরিয়ায় হাতকড়া পড়িয়ে এসএসসি পরীক্ষার্থীসহ তিন শিক্ষার্থীকে প্রেপ্তারের অভিযোগ উঠেছে থানা পুলিশের বিরুদ্ধে। গত বুধবার রাতে তাদের গ্রেপ্তার করে পুলিশ। সারারাত হাজতবাসের পর তাদের বৃহস্পতিবার বিকেলে আদালতে পাঠানো হয়। পুলিশ বলছে তাদের বয়স যাচাই বাছাই না করে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
মামলা সূত্রে জানা যায়, উপজেলার হরগজ গ্রামের কালু মিয়ার সাথে একই গ্রামের ফরিদ হোসেনের ঝগড়া বিবাদ হয়। এ ঘটনায় ফরিদ হোসেন বাদী হয়ে ২৮ ডিসেম্বর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। হরগজ উচ্চ বিদ্যালয়ের ভোকেশনাল বিভাগের এসএসসি পরীক্ষার্থী সিয়াম হোসেন, সাটুরিয়া সৈয়দ কালুশাহ কলেজের মানবিক বিভাগের একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী মনির হোসেন ও মানিকগঞ্জ পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের প্রথম সেমিষ্টারের শিক্ষার্থী অনিক হোসেনকে আসামি করা হয়।
এদিকে একই ঘটনায় কালু মিয়া গত ২৭ ডিসেম্বর ফরিদ হোসেনসহ ৫ জনকে আসামি করে থানায় মামলা করেন। কিন্তু পুলিশ কালু মিয়ার মামলা নথিভুক্ত না করে ফরিদ হোসেনের করা মামলায় তিন শিক্ষার্থীকে গত বুধবার রাতে গ্রেপ্তার করে।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক মো.রায়হান বলেন, বাদী মামলায় ওই তিন শিক্ষার্থীর বয়স ১৮ থেকে ২০ বছর দেখিয়েছেন। তাদের হাতকড়া পড়িয়ে গ্রেপ্তার ও হাজতখানায় রাখা আইন মোতাবেক হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, গ্রেপ্তার করার পরের দিন বৃহস্পতিবার জানতে পেরেছি তারা তিনজন শিক্ষার্থী।
গ্রেপ্তারকৃত তিন শিক্ষার্থী জানান, আমরা কোন মারামারি করিনি। আমাদের মিথ্যা মামলা দিয়ে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তার করার সময় আমাদের হাতকড়া পড়িয়ে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। সারারাত তীব্র শীতে থানার হাজতখানায় ছিলাম। পুলিশ মিথ্যা মামলায় আমাদের গ্রেপ্তার করে জীবন নষ্ট করে দিলো।
হরগজ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. বজলুর রহমান বলেন, গ্রেপ্তারকৃত ওরা তিনজনই কিশোর। তাদের কোন ভাবেই হাতে হাতকড়া পড়ানো বা হাজতখানায় পুলিশ রাখতে পারে না। তারা যদি অপরাধ করে থাকে দেশে শিশু কিশোর আইন আছে। সেই আইন অনুযায়ী বয়স যাচাই করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত ছিল।
সিয়ামের বাবা মো.নজরুল ইসলাম বলেন, আমার ছেলেকে বিনা অপরাধে হাতকড়া পড়িয়ে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। সামনে আমার ছেলের এসএসসি পরীক্ষা। আমার ছেলের ভবিষ্যৎ এভাবে নষ্ট করে দিল। এখন আমার ছেলেকে মামলা মাথায় নিয়ে আদালতে ঘুরতে হবে।
সাটুরিয়া থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো.শাহীনুল ইসলাম বলেন, তাদের হাতকড়া পড়ানো ও থানার হাজতখানায় রাখা হয়নি। একটি মামলায় তাদের গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।তারা যদি কিশোর হয় বয়স যাচাই বাছাই করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।