নিজস্ব প্রতিবেদক, গাজীপুর: বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ব্রি)-এর উদ্যোগে স্থানভিত্তিক ধানের জাত ও প্রযুক্তি উদ্ভাবন এবং বিদ্যমান গবেষণাগার উন্নয়ন কার্যক্রম আরও গতিশীল হয়েছে। প্রযুক্তির সম্প্রসারণ, গবেষণার গুণগত উন্নয়ন ও কৃষক পর্যায়ে দ্রুত প্রযুক্তি হস্তান্তরের লক্ষ্যে ইতোমধ্যে নতুন আঞ্চলিক কার্যালয় ও স্যাটেলাইট স্টেশন স্থাপন, গবেষণা ল্যাব উন্নয়ন, জার্মপ্লাজম সংগ্রহ, উন্নতমানের বীজ উৎপাদন, প্রক্রিয়াকরণ ও সংরক্ষণ, জনবলের উচ্চ শিক্ষা, কৃষি সম্প্রসারণ কর্মী ও কৃষকদের প্রশিক্ষণসহ নানামুখী কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।
শনিবার গাজীপুর ব্রি সদর দপ্তরে অনুষ্ঠিত হয় ‘‘নতুন ৬টি আঞ্চলিক কার্যালয় স্থাপনের মাধ্যমে স্থানভিত্তিক ধানের জাত ও প্রযুক্তি উদ্ভাবন এবং বিদ্যমান গবেষণাগার উন্নয়ন (এলএসটিডি) শীর্ষক প্রকল্পের অগ্রগতি বিষয়ক এক কর্মশালা। প্রকল্পের মেয়াদ ২০২৩ সালের ১ জুলাই থেকে ২০২৮ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত নির্ধারিত।
ব্রি মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন ব্রির মহাপরিচালক ড. মোহাম্মদ খালেকুজ্জামান। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (পরিকল্পনা অনুবিভাগ) মো. মাহবুবুল হক পাটওয়ারী, বিশেষ অতিথি ছিলেন ব্রির পরিচালক (গবেষণা) ড. মো. রফিকুল ইসলাম এবং পরিচালক (প্রশাসন ও সাধারণ পরিচর্যা) ড. মুন্নুজান খানম। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন প্রকল্প পরিচালক ড. মো. মোফাজ্জল হোসেন।
মূল প্রবন্ধে বলা হয়, ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার খাদ্য ও পুষ্টির নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এবং জলবায়ু পরিবর্তনের প্রেক্ষাপটে টেকসই ধান উৎপাদন পদ্ধতি গড়ে তুলতেই এলএসটিডি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। প্রকল্পের আওতায় ৬টি নতুন জাত ও ২০টি নতুন প্রযুক্তি উদ্ভাবনের লক্ষ্য নির্ধারিত হয়েছে। দক্ষিণাঞ্চল ও পাহাড়ি এলাকা সহ দেশের কৃষিতে অনগ্রসর অঞ্চলের স্থানভিত্তিক সমস্যার সমাধানে বাস্তবভিত্তিক গবেষণা ও প্রযুক্তির ওপর জোর দেয়া হচ্ছে।
প্রকল্পের আওতায় বর্তমানে একটি জাত উদ্ভাবনের কাজ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে এবং পাঁচটি নতুন প্রযুক্তি উদ্ভাবনের কাজ চলমান রয়েছে। সারাদেশে প্রাথমিকভাবে ১৫টি প্রযুক্তি গ্রাম নির্বাচিত করা হয়েছে যেখানে স্থানীয় ‘সার্ভিস প্রোভাইডারথ নিয়োগ দিয়ে ব্রি উদ্ভাবিত প্রযুক্তির প্রদর্শনী ও কৃষকদের প্রশিক্ষণ কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। এছাড়া স্থানীয় কৃষকদের অংশগ্রহণে ইতোমধ্যে ১৬৫টি মাঠ দিবস ও ফসল কর্তন কর্মসূচি সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে যা ব্রি উদ্ভাবিত উফশী আমন জাতের প্রসারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।
বক্তারা জানান, কৃষি উন্নয়নের ভিত্তি হিসেবে বিজ্ঞানভিত্তিক গবেষণাকে এগিয়ে নিতে এলএসটিডি প্রকল্প একটি সময়োপযোগী উদ্যোগ। স্থানভিত্তিক উদ্ভাবন, প্রযুক্তির দ্রুত সম্প্রসারণ ও কৃষি দক্ষতা বৃদ্ধিতে এ প্রকল্প গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তারা।