গাজীপুর প্রতিনিধি: বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন প্রোগ্রামের কারিকুলাম লে-আউট ও সিলেবাস অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের মত গতানুগতিক হওয়ার সুযোগ নেই। কারণ, এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো সমান সুযোগ নিয়ে পড়াশুনা চালিয়ে যেতে পারেন না। শিক্ষাক্ষেত্রে তাদেরকে অনেক প্রতিকূলতা ও বাঁধা অতিক্রম করতে হয়। তাই বাউবির কারিকুলাম ও সিলেবাস প্রণয়নের সময় এ দিকগুলি অবশ্যই বিবেচনায় রাখতে হবে। অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ন্যায় এ বিশ্ববিদ্যালয়ে সপ্তাহের সব দিন ক্লাস কার্যক্রম পরিচালনা সম্ভব হয় না। সে ক্ষেত্রে বিশেষায়িত এ বিশ্ববিদ্যালয়ের সিলেবাস এবং কারিকুলাম এমনভাবে প্রণয়ন করতে হবে যেন শিক্ষার্থীরা সপ্তাহে একদিন বা দুদিন ক্লাসে অংশগ্রহণ করে ঘরে বসেই তাদের বাকি শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে নিতে পারেন। এ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রোগ্রামভিত্তিক কারিকুলাম এবং সিলেবাস প্রণয়নের সাথে সংশ্লিষ্ট শিক্ষকমন্ডলীর মতামত এবং প্রস্তাবনা নিয়ে আগামীতে কিভাবে শিক্ষার্থী কেন্দ্রিক কারিকুলাম বাস্তবায়ন করা যাবে তার একটি রূপরেখা প্রণয়ন করাই আজকের সেমিনারের মুখ্য উদ্দেশ্য।
বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউশনাল কোয়ালিটি এ্যাসুরেন্স সেল (আইকিউএসি) আয়োজিত ‘ ওবিই (OBE) কারিকুলাম বাস্তবায়ন’ বিষয়ক দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত এক সেমিনারে আজ সোমবার (২০ জানুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের গাজীপুরস্থ ক্যাম্পাসে শিক্ষক সেমিনার কক্ষে সভাপতির বক্তব্য দানকালে উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ বি এম ওবায়দুল ইসলাম এসব কথা বলেন।
তিনি আরো বলেন, বাস্তবে কারিকুলাম ও সিলেবাস প্রণয়নের সময় শিক্ষার্থী, কারিকুলামের উদ্দেশ্য, ডিগ্রী অর্জনের পরে কর্মক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের অর্জিত জ্ঞানের প্রয়োগ হচ্ছে কিনা তা যাচাই করাই কারিকুলাম উন্নয়নের প্রধান বিবেচ্য বিষয় হওয়া উচিত। পূর্বে এ বিষয়ে কি হয়েছে তা না বলে বর্তমানে স্কুলসমূহের তাদের পরিচালিত সকল প্রোগ্রাম OBE কারিকুলাম বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে উদ্যোগ নিতে হবে। প্রতিটি স্কুল প্রোগ্রামভিত্তিক ছোট ছোট কমিটি গঠন করে তাদের মাধ্যমে একটা OBE কারিকুলাম আউটলাইন প্রস্তুত করে পরবর্তীতে বিষয়ভিত্তিক OBE এক্সপার্ট নিয়ে একদিন বা দুদিনের কর্মশালা আয়োজন করে অল্প সময়ের মধ্যে OBE কারিকুলাম উন্নয়ন করতে হবে। এই কাজের জন্য দরকার হবে প্রোগ্রাম ও স্কুলভিত্তিক ফ্রেমওয়ার্ক তৈরি করা এবং তা বাস্তবায়নের যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণ করা। অতীতে কি হয়েছে আর কি হয়নি- তা না ভেবে, আগামীতে কিভাবে যুগোপযোগী কারিকুলাম ও সিলেবাস প্রণয়ন করা যায় সে বিষয়ে সকলের একান্ত প্রচেষ্টা আশা করছি। সবাই একসঙ্গে সহযোগিতার মনোভাব নিয়ে কাজ করলে আগামী জুনের মধ্যেই প্রতিটি প্রোগ্রামের OBE কারিকুলাম প্রণয়ন করা সম্ভব হবে বলে আমার দৃঢ় বিশ্বাস। এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য তিনি সকলকে নিবেদিত হয়ে কাজ করার আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) প্রফেসর সাঈদ ফেরদৌস পিএইচডি, ট্রেজারার অধ্যাপক ড. আবুল হাসনাত মোহা. শামীম। সেমিনারে সঞ্চলনা ও স্বাগত বক্তব্য রাখেন ইনস্টিটিউশনাল কোয়ালিটি এ্যাসুরেন্স সেল এর পরিচালক অধ্যাপক ড. মো: সিরাজুল ইসলাম। এছাড়া সেমিনারে বিভিন্ন স্কুলের ডিন/ প্রতিনিধিরা স্নাতর ও স্নাতকোত্তর প্রোগ্রামসমূহের বর্তমান অবস্থা এবং OBE কারিকুলাম বাস্তবায়ন অগ্রগতির প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন। OBE কারিকুলাম বাস্তবায়ন বিষয়ক উপস্থাপনা করেন আইকিউএসি এর অতিরিক্ত পরিচালক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ জহির রায়হান ও অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মামুনূর রশিদ।
স্নাতর ও স্নাতকোত্তর প্রোগ্রামসমূহের সভাপতি, প্রোগ্রাম সমন্বয়কারী/সহ সমন্বয়কারী ও বিষয়ভিত্তিক শিক্ষকগণ এ সেমিনারে অংশগ্রহণ করেন।