আমতলী (বরগুনা) প্রতিনিধি: আমতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ আশরাফুল আলমের বদলির আদেশ প্রত্যাহারে ৪৮ ঘন্টার আল্টিমেটাম দেয়া হয়েছে। ৪৮ ঘন্টার মধ্যে বদলির আদেশ প্রত্যাহার না করলে উপজেলা শাটডাউন ও মহাসড়ক অবরোধের ঘোষণা দেয়া হয়েছে। বুধবার উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গণে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধিরা এ ঘোষণা দেন। এ মানববন্ধনে অন্তত দুই সহস্রাধিক ছাত্র—জনতা অংশ নেয়।
জানা গেছে, ২০২২ সালের ১১ ডিসেম্বর আমতলী আমতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার হিসেবে মুহাম্মদ আশরাফুল আলম যোগদান করেন। যোগদানের পর থেকে তিনি আমতলীর উন্নয়নসহ সার্বিক বিষয়ে সততার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। তার কর্ম দক্ষতায় তিনি আমতলী উপজেলার মানুষের মনিকোঠায় স্থান করে নেন। গত ৫ আগষ্ট হাসিনা সরকারের পতনের পর উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী বেশ কয়েকজন নেতা বিপাকে পড়ে। তারা ইউএনও মুহাম্মদ আশরাফুল আলমকে তাদের সমর্থনে কাজ করতে চাপ প্রয়োগ করেন। কিন্তু ইউএনও তাদের কথা আমলে নেয়নি। এতে বেঁকে বসেন আওয়ামী লীগের ওই প্রভাবশালী নেতারা। এরপর থেকে তারা ইউএনও আশরাফুল আলমকে অন্যত্র বদলি করতে উঠে পড়ে লেগে যান। তারা জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিবকে ভুল বুঝিয়ে ইউএনওকে বদলি করতে সক্ষম হয়। গত ১৮ ডিসেম্বর উপ—সচিব আমিনুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক আদেশে আমতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ আশরাফুল আলমকে কুমিল্লায় বদলি করেন। এ বদলির আদেশের খবর আমতলী উপজেলায় ছড়িয়ে পড়লে সাধারণ মানুষ ক্ষোভে ফেটে পড়েন।
গত ১৯ ডিসেম্বর (বৃহস্পতিবার) থেকে উপজেলার মুক্তিযোদ্ধাসহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ তার বদলির আদেশ প্রত্যাহারের দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচী পালন করে আসছেন। ইউএনওর বদলি আদেশ প্রত্যাহারের দাবিতে বুধবার উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গণে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র—জনতা মানববন্ধন করেছেন। মানববন্ধনে ইউএনও’র বদলির আদেশ প্রত্যাহারে ৪৮ ঘন্টার আল্টিমেটাম দেয়া হয়েছে। ৪৮ ঘন্টার মধ্যে বদলির আদেশ প্রত্যাহার না করলে উপজেলা শাটডাউন ও মহাসড়ক অবরোধের ঘোষণা দেয়া হয়েছে। মানববন্ধনে দুই সহস্রাধিক ছাত্র—জনতা অংশ নেয়। আমতলী উপজেলা বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন প্রতিনিধি মোহাম্মদ আব্দুল্লাহর সভাপতিত্বে মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন সদস্য মৈতি, আবিদ, নাবিল, রেদওয়ান ও নির্জনা।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, আমতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ আশরাফুল আলম একজন সৎ অফিসার। গত ৫ আগষ্টের পরে উপজেলা আওয়ামী লীগের কয়েকজন প্রভাবশালী নেতা উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে দিয়ে অনৈতিক কাজের প্রস্তাব দেন। কিন্তু ইউএনও তাদের প্রস্তাবে রাজী না হওয়ায় তারা বিপাকে পড়েন। এরপর ইউএনওকে বদলি করাতে উঠে পড়ে লেগে যান আওয়ামী লীগের ওই দুষ্টচক্র। তারা আরো বলেন, এখনো উপজেলা আওয়ামী লীগের দোসরা সক্রিয়। তারা প্রশাসনের উপর নগ্ন হস্তক্ষেপ করতে চায়। দ্রুত ইউএওনওকে বদলির আদেশ প্রত্যাহারের দাবি জানান তারা।
