পরিবর্তিত সময়, ভিন্ন পেক্ষাপট। ১৬ বছর পর সংসদের বাইরে আবারও তুলে ধরা হবে ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরের বাজেট। এরই মধ্যে স্পষ্ট হয়েছে অর্থনীতির নানামুখী সংকট। সাধ আর সাধ্যের সমন্বয় ঘটানোও কঠিন।
এমন এক বাস্তবতায় কিছুটা নিয়ন্ত্রিত বাজেট ঘোষণা করবেন অর্থ উপদেষ্টা অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ।
তার ইচ্ছা, ঋণ কমিয়ে অভ্যন্তরীণ আয় বৃদ্ধির মাধ্যমে হবে বাজেট বাস্তবায়ন। ধার করে বড় বাজেট বাস্তবায়নের বিপক্ষে তিনি।
তবে, যে প্রকল্পই বাস্তবায়ন হবে, তাতে কারও নাম বা ‘মনুমেন্ট’ যুক্ত হবে না। প্রবৃদ্ধির উচ্চাশা করবেন অর্থ উপদেষ্টা। পুঁজিবাজার নিয়েও থাকবে দিক-নির্দেশনা।
অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, আমাদের মূল লক্ষ্যটা হলো বাজেটে অর্থের সৎ ব্যবহার। আগে বড় বড় বাজেট হয়েছে, বড় বড় ব্যয় বরাদ্ধ হয়েছে। বেশিরভাগ অর্থ কিন্তু অপচয় হয়েছে, দুর্নীতি হয়েছে। প্রবৃদ্ধিটা তো আমরা বলছি, পাঁচ রাখলে ভালো হয়। আবার, অভ্যন্তরীণ আয়ের ওপর একটু নির্ভর করবো, যাতে চাপ না পড়ে।
এদিকে, কাঙ্খিত মাত্রায় বাড়ছে না মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি)। দেশি-বিদেশি বিনিয়োগে চাঞ্চল্য নেই। তবে, আগামী অর্থবছরের জন্য সাড়ে ৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য ঠিক করেছেন অর্থ উপদেষ্টা।
ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, জিডিপি প্রবৃদ্ধি এবার যেটা হবে… শেষ পর্যন্ত হয়তো ৫ হবে। চেষ্টা করবো, আগামী বছর ৫.৫-এ যাবো। আমরা সাত-আটে লক্ষ্য করবো না।
বছরজুড়েই প্রকল্প ধরে ব্যয় করবে সরকার। এক্ষেত্রে গুরুত্ব পাবে ভৌত অবকাঠামো, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি, শিক্ষা-স্বাস্থ্য খাত। তবে থাকবে না মেগা প্রকল্প ও মনুমেন্ট।
ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, মনুমেন্ট এটা লোক দেখানো, সব প্রতিষ্ঠানে থাকবে। এটা ভারতে আছে, বাংলাদেশে তো অনেক বেশি আছে। অতএব ভৌত-অবকাঠামোই লাগবে। আমরা তো বলবো না যে রাস্তাঘাট করবো না। বিদ্যুৎ উৎপাদন, হাসপাতাল, স্কুল তৈরি করবো না; সাথে সাথে সামাজিক উন্নয়নের বিষয়টি একটু দেখবো।
পুঁজিবাজারে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে থাকবে কিছু উদ্যোগ। সংস্কার উদ্যোগ গ্রহণের বিষয়েও বাজেটে থাকবে দিকনির্দেশনা।
ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ দীর্ঘমেয়াদী, বড় বিনিয়োগও। নেগেটিভ ইকুইটির ব্যাপারটা আমরা সলভ করি। নেগেটিভ ইকুইটি মানে, আপনি মার্জিন লোন নিয়ে বাজারে আসলেন, তারপর শেয়ার কমে ইকুইটি নেগেটিভ হয়ে গেলো। কিন্তু আপনার ওইটার (ঋণের) বিষয়ে আমরা বাংলাদেশ ব্যাংকের সাথে কথা বলে সময় নিয়েছি। দ্বিতীয়ত হলো, আমরা চেষ্টা করি নতুন আইপিও আনার জন্য।
সবকিছু ঠিক থাকলে ২ জুন বিকেল ৩টায় উপস্থাপন করা হবে আগামী অর্থবছরের বাজেট।