বাবুগঞ্জ (বরিশাল) প্রতিনিধি: বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলার কেদারপুর ইউনিয়নের বোয়ালিয়া গ্রামে দীর্ঘদিন থেকে চলে আসা মেলা ও যাত্রার প্যান্ডেল ভাঙচুর করে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছে বিক্ষুব্ধ জনতা।
শুক্রবার (১৩ জুন) দিবাগত রাত নয়টার দিকে স্থানীয় এলাকাবাসী ও তৌহিদি জনতার ব্যানারে কয়েক শতাধিক লোক মেলার নামে অশ্লীল নৃত্য ও জুয়ার আসরের প্যান্ডেলে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর করে অগ্নিসংযোগ করে।
জানা গেছে, উপজেলার কেদারপুর ইউনিয়নের বোয়ালিয়া গ্রামে পহেলা বৈশাখ থেকে মাসব্যাপী বৈশাখী মেলা শুরু হয়। তখন সেখানে সার্কাস ও পুতুল নাচের নামে অশ্লীল নৃত্য ও রাতভর জুয়ার আসর পরিচালনার অভিযোগ ওঠে।
অভিযোগ রয়েছে, সেখানে যাত্রার আড়ালে রাতভর বিভিন্ন প্রকার জুয়া খেলা সহ দেহ ব্যবসার মতো জঘন্য ঘটনাও ঘটেছে।
স্থানীয় সূত্রে আরও জানা গেছে, পার্শ্ববর্তী দেহের গতি ইউনিয়নের রাহুতকাঠি এলাকায় ঈদ আনন্দ মেলার নামে আরেকটি মেলা করার জন্য চলতি মাসের শুরুতে বরিশাল জেলা প্রশাসকের দপ্তরে আবেদন করা হয়। সে মতে পুতুল নাচসহ মেলার বিভিন্ন প্রকার ষ্টল নির্মান সম্পন্ন করা হয়।
বরিশাল সোসাইটি নামের একটি সংগঠন মেলার অনুমতি না দিতে জেলা প্রশাসকের দপ্তরে পাল্টা আবেদন করেন। এনিয়ে কেদারপুর এলাকায় গত কয়েকদিন ধরে চরম উত্তেজনা চলে আসছিলো।
এরইমধ্যে শুক্রবার (১৩ জুন) দিবাগত রাত নয়টার দিকে তৌহিদী জনতার ব্যানারে কয়েক শতাধিক লোক মেলার যাত্রা প্যান্ডেলে হামলা চালায়। এ সময় তারা লাঠিসোটা নিয়ে মেলার জন্য স্থাপন করা কাঠামো ও যাত্রা প্যান্ডেল ব্যাপক ভাংচুর করে আগুন ধরিয়ে দেয়।
ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে স্থানীয় ৬ নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য মুসা আলী সাংবাদিকদের বলেন, ঘটনার সময় আমি এলাকায় ছিলাম না তবে দীর্ঘদিন যাবত বৈশাখী মেলার নাম করে ওই স্থানে নাচ গান হতো। এ নিয়ে এলাকার মানুষের মধ্যে একটা ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। শুক্রবার রাতের অন্ধকারে তৌহিদী জনতার নামে একদল মানুষ সবকিছু ভাঙচুর করে আগুন দিয়েছে।
মেলা কমিটির সভাপতি বাবুগঞ্জ উপজেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির সদস্য সিজন সিকদার বলেন, আগে বৈশাখী মেলা হয়েছিলো। এরপর শুধুমাত্র গানের আয়োজন ছিলো। ঈদ আনন্দ মেলার অনুমতি না পাওয়ায় দুইদিন আগে কমিটিই সব বন্ধ করে দিয়েছে। রাতে কিছু উশৃঙ্খল লোক এসে স্থাপনাগুলো ভাঙচুর করে অগ্নিসংযোগ করেছে।
বাবুগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জহিরুল ইসলাম বলেন, মেলার স্থান এলাকার কিছু লোকজন হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। খবর পেয়ে রাতেই পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।