হাতিয়া উপজেলা,নোয়াখালী: নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলার তমরোদ্দিতে পূর্ব ঘটনার জের ধরে বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে ৫ জন গুরুতর আহত হয়। এ ঘটনায় উভয় পক্ষ হাতিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি) আজমল হুদাকে দায়ী করেন।
বৃহস্পতিবার রাত ৯টার সময় উপজেলার তমরোদ্দি বাজারে স্থানীয় বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এসময় দুই পক্ষের সংঘর্ষে ৫ জন গুরুতর আহত হয়। পরে তাদেরকে হাতিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ভর্তি করানো হয়। আহতরা হলেন- সোহেল উদ্দিন (৩০), রুবেল (২৫), মো. রনি (২৬), এরশাদ (৩৫), পয়েল (২৫)। এদের সবার বাড়ি তমরদ্দি ইউনিয়নের আঠারো বেকীতে।
জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা: মানছুরুল হক জানান, আহতদের মধ্যে ৪ জনকে রাতেই হাতিয়ার বাইরে রেফার করা হয়। এবং এরশাদ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকলে শুক্রবার(১৩ জুন) সকালে তাকেও রেফার করা হয়। এদের মধ্যে রুবেলের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানান তিনি। এরা তানভীর হায়দারের সমর্থক বলে জানা যায়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মঙ্গলবার (১০ জুন) বিকেলে তমরদ্দি ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি তানভীর হায়দার গ্রুপ ও উপজেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আলমগীর কবির গ্রুপের মাঝে সংঘর্ষ হয়। এতে কমসেকম ১৫ জন আহত হয়। তারই জের ধরে বৃহস্পতিবার রাত ৯টার সময় তমরোদ্দি বাজারে গ্রুপদ্বয়ের মাঝে পুনরায় এ সংঘর্ষ বাঁধে।
এবিষয়ে হাতিয়া উপজেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আলমগীর কবির বলেন," ১০ জুন তমরোদ্দিতে বিএনপির চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবুর রহমান মামীমের একটা প্রোগ্রাম ছিল। ঐদিন দুপুরে তমরোদ্দি থেকে এক কিলোমিটার পূর্বে আম বাহী টমটমে তাদের সমর্থিত যুবলীগের সুৃমন,খোকন এবং এনায়েতের নেতৃত্বে হামলা করে। ঘটনাটি ওসিকে জানানোর পরও তিনি আসেননি, তিনি এসেছেন বিকেল বেলা প্রোগ্রাম চলাকালে। তখন প্রোগ্রাম স্থল থেকে উত্তর দিকে ওসি রওনা দিলে তার পিছনে পিছনে বাজারের উত্তর মাথায় এসে স্বেচ্ছাসেবক লীগের হানিফ এবং যুবলীগের সোহেলের নেতৃত্বে ইমাম হোসেনের তেলের দোকান, কাশেমের চা দোকানসহ তিনটি দোকানে লুটপাট করে। পরে জনগণ প্রতিরোধ গড়ে তোলে। ওইদিনের গঠনায় ওসি তাদের পক্ষে দু'টি মামলা রেকর্ড করে। কিন্তু আমাদের ১০ জন লোক আহত হলেও ওসি মামলা নেয়নি। এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল রাতে বাজারের দক্ষিণ পাশে তানভীর হায়দার তান্নার আপন তালোই ও আওয়ামীলীগ নেতা কাশেম মেম্বার এবং মুন্সিয়ার নেতৃত্বে চা দোকানে বিএনপির সাধারণ নেতাকর্মীদের ওপর হামলা করে। যেখানে ৫ আগস্টের পর লুটপাট হয়,সেইম একই ঘটনা সেখানে হয়। এরজন্য পুরোপুরি হাতিয়া থানার ওসি দায়ী। " এসময় তাদের সমর্থিত জুয়েল, মোঃশাহাদাত, আব্দুর রহিম, গিয়াসউদ্দি,রিয়াজ, রবিনসহ ৭জন আহত হয়েছে বলে জানান তিনি। হামলাকারীরা ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে বিভিন্ন পদ ও সভাসমাবেশে নেতৃত্ব দানের ডকুমেন্টসও তুলে ধরেন তিনি।
এদিকে, তমরোদ্দি ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি তানভীর হায়দার তান্না বলেন," বাজারের দক্ষিণ মাথায় আমাদের বিএনপি এই পাঁচজন দোকানে বসে চা চক্র এবং কথাবার্তা বলছিল। অতর্কিত উত্তর দিক থেকে এসে আলমগীর কবির, নিজাম চৌধুরী ও শামীমদের ঘাটের লেবাররা হামলা চালায়। কোনোপ্রকারের উস্কানী ছাড়াই তারা এ হামলা চালিয়েছে। পূর্বের ঘটনায় দু'টি মামলার কাউকে এরেস্ট করেনি- পুলিশ ও নৌবাহিনী। প্রশাসনের এ অনিহার কারণে সন্ত্রাসীরা আস্কারা পায়। পুলিশ ও নৌবাহিনী একটি অভিযানও পরিচালনা করেনি। " তাদের সাথে যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ যুক্ত থাকার বিষয়ে তানভীর হায়দার বলেন, তারা হামলা করে আবার আওয়ামী তকমা দিবে তা তো হয়না।
দুই পক্ষের অভিযোগের বিষয়ে হাতিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি) একেএম আজমল হুদা বলেন, কে কি বললো সেটা দেখার বিষয় নয়,পুলিশ তার কর্তব্য পালন করবে টাইম মতে। ঘটনার শুরুর দিন নৌবাহিনী এবং কোস্ট গার্ডও ছিলো। আমরা সবাইকে নিবৃত্ত করার চেষ্টা করেছি।
