উত্তম গোলদার, মির্জাগঞ্জ (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি: পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জের আমড়াগাছিয়া ইউনিয়নের ডোমরাবাদ এলাকায় মালবাহী ট্রলারের ধাক্কায় বেড়েরধন নদীর উপর ভাঙ্গা ডোমরাবাদ-জলিশা সংযোগ সেতু ব্রীজটি পাঁচ বছর ধরে ভেঙ্গে পড়ে আছে। দীর্ঘদিন সংস্কার না হওয়ায় বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে মির্জাগঞ্জ উপজেলা ও পার্শ্ববর্তী বেতাগী উপজেলার জলিশাসহ দুই উপজেলা যোগাযোগ ব্যবস্থা। ভেঙ্গে পড়ার পর থেকেই এখন পর্যন্ত ব্রীজটি একই অবস্থায় পড়ে রয়েছে। এতে নদী পারাপারে চরম দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে কৃষক, শিক্ষার্থী ও ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন পেশাজীবী সাধারণ মানুষদের। তবে বিকল্প কোন ব্যবস্থা না থাকায় পথচারীদেরকে ৪-৫ কিলোমিটার পথ বেশি চলতে হচ্ছে।
জানা যায়, ২০০৬ সালে ৭ এপ্রিল মাসে সেতুটি নির্মিত হয়। সেতুটির পশ্চিম পারে পার্শ্ববর্তী বরগুনার বেতাগী উপজেলার জলিশা ও পূর্ব পারে পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জ উপজেলা। সেতুটি দিয়ে উপজেলার ডোমরাবাদ, উত্তর আমড়াগাছিয়া, মধ্য আমড়াগাছিয়া ও ওপারের হোসনাবাদ, জলিশা এলাকার কয়েক হাজার মানুষ প্রতিনিয়ত যাতায়াত করত। কিন্তু ব্রীজটি নির্মাণের ১৪ বছর পরে ২০২০ সালের জানুয়ারি মাসে একটি মালবোঝাই ট্রলারে ধাক্কায় ভেঙ্গে পড়ে। এতে ভোগান্তিতে দুই উপজেলার মানুষ।
সরেজমিন দেখা যায়, বেড়েরধন নদীর পূর্ব ও পশ্চিম সাইডে ব্রীজের ভাঙ্গা অংশ পড়ে রয়েছে। ফলে ব্রীজ ভেঙ্গে যাওয়ার পর থেকে যোগাযোগ ব্যবস্থা বন্ধ রয়েছে। স্থানীয়রা বলেন, নদীর উপর ব্রীজ না থাকায় দুই উপজেলার যোগাযোগ কৃষি আবাদ বাজার ঘাট, শিক্ষার্থীদের যাতায়াতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। গ্রামগুলোর কোন জরুরী রোগীকেও হাসপাতালে আনতে প্রায় ১০-১২ কিঃমিঃ ঘুরিয়ে নিতে হচ্ছে। অথচ এখানে ব্রীজ থাকলে অনেক সহজে এবং তাড়াতাড়ি নিয়ে যাওয়া যেত। এছাড়াও যোগাযোগ ব্যবস্থার অভাবে কৃষকরাও তাদের আবাদকৃত ফসল ঠিকমত বাজারে বাজারজাত করতে পারছে না।
ব্রীজ সংলগ্ন ডোকলাখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ ফিরোজ আলম বলেন, গত ২০২০ সালের ২১ জানুয়ারি রাতে একটি মাল বোঝাই ট্রলারে ধাক্কায় ব্রীজটি পশ্চিম পাশের দিক দুমড়ে-মুচড়ে নদীর মধ্যে পড়ে যায়। ব্রীজটি ভেঙ্গে যাওয়ায় মির্জাগঞ্জ উপজেলা ও প্বার্শবর্তী বেতাগী উপজেলার মধ্যে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। এসময় ট্রলারের মাঝিসহ ৩জন আহত হয়। ব্রীজটি ভেঙ্গে যাওয়ায় ওই পাড়ের প্রায় ২০-২৫ জন শিক্ষাথী আসতে পারে না। প্রথমদিকে শিক্ষার্থীরা খেয়া পার হয়েও আসলেও নদী পারাপার ঝুঁকিপূর্ণ, তাই তারা আসতে পারছে না। বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর সংখ্যাও কমছে। কয়েক বছর হলেও ব্রীজটি সংস্কারের ব্যবস্থা হচ্ছে না তাই এলাকাবাসীর দাবি অতিদ্রুত এখানে ব্রীজ নির্মাণ করা হয়। এ ব্যাপারে মির্জাগঞ্জ উপজেলার প্রকৌশলী চন্দন কুমার চক্রবর্তী বলেন, উপজেলার ডোমরাবাদ এলাকায় ভেঙ্গে যাওয়া ব্রীজের স্থানে নতুন ব্রীজ নির্মাণের জন্য সয়েল টেষ্ট হয়ে গেছে। টেন্ডার প্রক্রিয়া শেষ হলেই অতিশিঘ্রই ওই স্থানে ব্রীজ নির্মাণের কাজ শুরু হবে।